ঢাকাশুক্রবার, ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নদভীর বিরুদ্ধে আইআইইউসি এর ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ২১, ২০২৫ ৪:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নদভীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (আইআইইউসি) থেকে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নদভীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল নদভীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ বিষয়ে সুবেল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, “নেজামুদ্দিন নদভী আইআইইউসি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি এবং আরও কিছু ব্যক্তি মিলে সম্মানীর নামে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে আজ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

দুদক সূত্রে জানা গেছে, আইআইইউসি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নদভী এবং অন্যান্য ব্যক্তিরা সম্মানীর নামে ১০ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নদভী একাই ১০ লাখ ৯ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা চৌধুরী ৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, প্রফেসর ড. কাজী দ্বীন মুহাম্মদ ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী ২ লাখ টাকা এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হুমায়ন কবির ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এভাবে মোট ১৬ জন ব্যক্তি তিন বছরে ১০ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাত করেছেন বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে।

এ ছাড়া নদভী গাড়ি ক্রয়, ছেলের বিদেশ যাওয়া এবং স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ঋণ ও অর্থের অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দুদকের তদন্তে আরও উঠে এসেছে, নদভী তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে দেশে ও বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।

চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত নদভীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালতের আদেশে বলা হয়, “নদভী ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে দেশে ও বিদেশে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুদক তথ্য পেয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।”

নদভী বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন। দুদকের তদন্ত এগিয়ে চলছে এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইআইইউসি ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে।

এই তদন্তের ফলাফল চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে কী প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। দুদকের এই পদক্ষেপ দুর্নীতি প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।