ঢাকাবৃহস্পতিবার, ২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নগরের ইপিজেডে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র সদস্য পরিচয়ে চাঁদাবাজি, দুইজন আটক

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ২০, ২০২৫ ১২:২১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা এলাকায় ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র সদস্য পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় দুই যুবককে হাতেনাতে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও হকাররা।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাতে ব্যবসা করা হকারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছিল। সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে, যা দিতে না পারায় তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দিবাগত রাতে বন্দরটিলা সিটি করপোরেশন মার্কেটের সামনে থেকে ইপিজেড থানা পুলিশ তাদের আটক করে। পরে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. আজিম বাদী হয়ে ইপিজেড থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতার হওয়া দুই যুবক হলেন— নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরসিংহপুর গ্রামের মৃত মফিজ উল্লাহর ছেলে আবদুল কাদের ইমন (২৩) এবং বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের মৃত হেমায়েত মাঝির ছেলে আসাদুজ্জামান রাফি (২৬)। তারা দুজনই জাতীয় নাগরিক কমিটির ইপিজেড থানা কমিটির সদস্য হিসেবে পরিচয় দিতেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যবসায়ী আজিম ও রিপন দীর্ঘদিন ধরে সিইপিজেড এলাকায় ভ্যানগাড়িতে ব্যবসা করেন। ইমন ও রাফি নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছিল। মঙ্গলবার সকালে ইমন চাঁদার টাকা নিতে গেলে টাকা না থাকায় ব্যবসায়ীরা দিতে পারেননি।

রাত ১২টার পর রাফি ব্যবসায়ী আজিমকে ফোন করে টাকা না দিলে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন। এরপর তাদের বন্দরটিলা সিটি করপোরেশন মার্কেটের সামনে যেতে বলা হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর ইমন ও রাফি ব্যবসায়ী রিপনের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং হুমকি দিতে থাকেন। ব্যবসায়ীরা ২ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও তারা গালাগাল শুরু করে। এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা এগিয়ে এলে কিছু সহযোগী পালিয়ে যায়, কিন্তু ইমন ও রাফিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

ব্যবসায়ী রিপন মিয়া বলেন, ‘ইমন ও রাফি আমাদের বলেছিল তারা বড় সমন্বয়ক, তাদের ওপর আর কেউ নেই। আমরা ব্যবসা করতে চাইলে তাদের টাকা দিতেই হবে। আমরা প্রতি সপ্তাহে ২-৩ হাজার টাকা করে দিতাম, কিন্তু এখন তারা ৩০ হাজার টাকা দাবি করেছে। টাকা দিতে না পারায় তারা আমাদের হুমকি দেয়। পরে স্থানীয়রা আমাদের রক্ষা করে এবং তাদের পুলিশে দেয়।’

ইপিজেড থানার ওসি মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য পরিচয়ে দুই যুবক চাঁদা নিতে গেলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের ধরে আমাদের খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে এবং আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’

উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক ছাড়া কমিটির সব ধরনের নির্বাহী, সেল ও সার্চ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে গ্রেপ্তারকৃতদের সংগঠনের সঙ্গে বর্তমানে কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।