চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন বিভাগে ৪ হাজার শূন্যপদে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বন্দরের সদস্য ও উচ্চ পদে বাইরে থেকে কর্মকর্তা আনা চলবে না; বরং কর্মরত অভিজ্ঞ, দক্ষ ও সৎ কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণস্পন্দন এনসিটি (নিউকন্টেইনার টার্মিনাল) ও সিসিটি (সাউথ কন্টেইনার টার্মিনাল) সহ কোনো স্থাপনা দেশি-বিদেশি অপারেটর বা ব্যক্তি মালিকানায় দেওয়া যাবে না। বরং দেশের স্বার্থে বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে সেগুলো পরিচালনা করতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর ইসলামী শ্রমিক সংঘের ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামী শ্রমিক সংঘের সভাপতি মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াছিনের পরিচালনায় বন্দর রিপাবলিক ক্লাবে এ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান।
শাহজাহান চৌধুরী আরও বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বন্দরের উন্নয়ন ও সুষ্ঠু পরিচালনা নিশ্চিত করতে হলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অপরিহার্য। বন্দরের শূন্যপদগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি চলবে না। বন্দরের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে উচ্চ পদে বসাতে হবে।”
তিনি বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এনসিটি ও সিসিটি বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে রাখার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “বন্দরের এসব স্থাপনা দেশি-বিদেশি অপারেটর বা ব্যক্তি মালিকানায় দেওয়া হলে দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। তাই এসব স্থাপনা বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করতে হবে।”
ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি এস এম লুৎফর রহমান বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। তাদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। বন্দরের উন্নয়ন ও সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য শ্রমিকদের সাথে সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সমন্বয় বাড়াতে হবে।”
ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের চট্টগ্রাম মহানগরী সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী, বন্দর থানার প্রধান উপদেষ্টা মাহমুদুল আলম এবং সাবেক ৩৭ নং কাউন্সিলর শফিউল আলম।
উপস্থিত ছিলেন বন্দর থানা উপদেষ্টা ইকবাল শরীফ, ফেডারেশন বন্দর থানা সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম আদনান, শ্রমিক নেতা আব্দুর রহিম পাঠান, মুহাম্মদ জাকারিয়া, সানাউল্লাহ আজমী, মুহাম্মদ কিবরিয়া, আমিনুল ইসলাম রুমেল, রবিউল ইসলাম, মুহাম্মদ ইউসুফ, ফোরকান আজাদ, আবুল বশর-সহ ইসলামী শ্রমিক সংঘের নেতৃবৃন্দ, ফেডারেশনের স্থানীয় নেতারা। প্রায় দুই হাজার বন্দর শ্রমিক ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।
শাহজাহান চৌধুরীর এই বক্তব্য চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়োগ প্রক্রিয়া ও স্থাপনা ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে। বন্দরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।