চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সংঘর্ষের সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিকেল ও সন্ধ্যায় উপজেলার নোয়াজিষপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম সংঘর্ষটি ঘটে বিকেল ৪টায় নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের মদন চৌধুরীবাড়ি জামে মসজিদ মাঠে। এখানে বিএনপির চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীরা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা ২০-২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে হামলা চালায়। এ সময় গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী যুবদল নেতা মো. কাইয়ুম কপালে গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হুমায়ুন (২৮), যুবদল সদস্য মো. রিফাত (২৭), যুবদল সদস্য সচিব মো. সোহেল, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফোরকান সিকদার (৪৪) এবং নেতা জাহাঙ্গীর আলমসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, কাইয়ুম ও গাজী মোরশেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দ্বিতীয় সংঘর্ষটি ঘটে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের ইউসুফ খাঁর দিঘিতে। গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা চিকদাইর ইউনিয়নের একটি ইফতার মাহফিল থেকে ফেরার পথে এখানে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীদের হামলার শিকার হন। এ সময় গুলি ও কিরিচের ব্যবহার করা হয়। হামলায় যুবদল নেতা গাজী মোরশেদ, মো. সেকান্দর, মো. বাদশা ও মো. ফোরকানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনায় উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে। গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফোরকান সিকদার বলেন, “আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। সন্ধ্যায় তাদের ওপর কারা হামলা করেছে, তা আমরা জানি না।”
অন্যদিকে, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী উত্তর জেলা যুবদল নেতা সেলিম উদ্দিন বলেন, “ইফতার মাহফিল থেকে ফেরার পথে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীরা আমাদের মোটরসাইকেল বহরে অতর্কিত হামলা চালায়। এই সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।”
রাউজান থানা পুলিশের উপপরিদর্শক নাছির উদ্দীন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে পাওয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।