ঢাকামঙ্গলবার, ১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টুলসি গ্যাবার্ডের মন্তব্যের প্রতিবাদে বাংলাদেশের কড়া প্রতিক্রিয়া

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ১৮, ২০২৫ ১:৫৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন কংগ্রেস সদস্য ও ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (ডিএনআই) টুলসি গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে “গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে” নোট করেছে। গ্যাবার্ড অভিযোগ করেছেন যে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের “নিপীড়ন ও হত্যা” করা হচ্ছে এবং দেশে “ইসলামিক সন্ত্রাসীদের হুমকি” একটি “ইসলামিক খিলাফত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে শাসনের আদর্শের সাথে যুক্ত”। বাংলাদেশ সরকার এই বক্তব্যকে “ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর” আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি দেশের শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইসলামী ঐতিহ্য এবং সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের অর্জনকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, “টুলসি গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য কোনো প্রমাণ বা নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নয়। এটি বাংলাদেশের সম্পূর্ণ জনগণ ও রাষ্ট্রকে একটি অযৌক্তিক ও ক্ষতিকারক চিত্রে উপস্থাপন করেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই চরমপন্থার চ্যালেঞ্জ থাকলেও, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সামাজিক সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে সমন্বয় করে এসব মোকাবিলায় অগ্রগতি অর্জন করেছি।”

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “বাংলাদেশকে ‘ইসলামিক খিলাফত’-এর ধারণার সাথে জড়িত করার এই অপপ্রয়াস দেশের কোটি নাগরিক, তাদের আন্তর্জাতিক বন্ধু ও অংশীদারদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অর্জনকে অস্বীকার করার শামিল। বাংলাদেশ যেকোনো ধরনের ‘ইসলামিক খিলাফত’ এর ধারণার সাথে সম্পৃক্ততার সবচেয়ে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছে।”

বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জোর দেওয়া হয়েছে যে, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের সাথে অংশীদারিত্বে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। ধর্মীয় সম্প্রীতি, সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষা এবং সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে আইনি ও সামাজিক পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, “সংবেদনশীল ইস্যুতে বক্তব্য দেওয়ার আগে যথাযথ তথ্য ও জ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে কথা বলুন। ক্ষতিকারক স্টেরিওটাইপ ও ভয়ভীতিকে উসকে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়াতে পারে।”

বিবৃতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্পষ্ট করে বলেছে, “সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে বাংলাদেশ তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। আমরা সকল দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে সম্মান করে বাস্তবতা ও তথ্যের ভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে অংশ নিতে প্রস্তুত।”

টুলসি গ্যাবার্ডের এই বক্তব্য সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সন্ত্রাসবিরোধী ভাবমূর্তিকে চ্যালেঞ্জ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ সরকারের এই জবাদ্দোত্মক প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের অবস্থান স্পষ্ট করার পাশাপাশি ভুল তথ্য ঠেকানোর চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।