মার্কিন ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করেছেন, যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তবতা বিবর্জিত এবং সুস্পষ্টভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভারতে সফরকালে দিল্লিতে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে “গভীর উদ্বেগ” প্রকাশ করেছেন, যা মূলত বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে অস্থিতিশীল ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের দেশ হিসেবে উপস্থাপনের একটি কৌশল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এনডিটিভির এক প্রশ্নের জবাবে তুলসী গ্যাবার্ড দাবি করেন, “বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, হত্যা ও অত্যাচার চলছে,” যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ তার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই ধরনের মন্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যের সময় ও প্রেক্ষাপট নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বাংলাদেশ সরকার ও মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে সংলাপ নতুন করে শুরু হওয়ার সময়েই তার এই বক্তব্য এসেছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অস্থিতিশীল করার একটি প্রচেষ্টা হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল। এছাড়া, ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া আরেকটি সাক্ষাৎকারে তিনি ‘ইসলামি জঙ্গিবাদ’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে আনেন, যা আরও বিতর্কিত। পাকিস্তানের মাটি থেকে ভারতবিরোধী সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে কথা বলতে গিয়েও তিনি বাংলাদেশকে এর সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “আমরা দেখছি কীভাবে এটি বাংলাদেশেও প্রভাব ফেলছে,” যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং স্পষ্টভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার একটি প্রচেষ্টা। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তুলসী গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা হয়তো ভারতের একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বহুদিন ধরে বিদ্যমান এবং সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে সবসময় তৎপর। কিন্তু তুলসী গ্যাবার্ডের এই ধরণের মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হতে পারে বলে কূটনীতিকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ ধরনের মন্তব্য যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও তথ্য বিকৃতির একটি প্রচেষ্টা, তা বোঝা যাচ্ছে।