শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের দ্বৈত পরিচয় নিয়ে বিতর্ক: বাংলাদেশি এনআইডি ও ভারতীয় আধার কার্ড ভাইরাল
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং ভারতীয় আধার কার্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে তার নাম, পিতার নাম ও জন্মতারিখে অসামঞ্জস্য দেখা গেছে। তবে আধার কার্ডটির তথ্য সঠিক কি না, তা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ভাইরাল হওয়া ভারতীয় আধার কার্ড অনুযায়ী, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের নাম পরিবর্তন করে “বিধান মল্লিক” রাখা হয়েছে। কার্ডে বাবার নাম উল্লেখ করা হয়েছে “মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক” এবং জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৫৯। আধার নম্বর ৮৪৪২০৫৬৭৫৭২৬ এবং ঠিকানা শাড়াপুল, ডাকবাংলো স্বরূপনগর, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ ৭৪৩২৮৬।
অন্যদিকে, তার বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) নাম শেখ সালাহউদ্দিন, পিতা শেখ আবু নাছের, মাতা রাজিয়া খাতুন এবং জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৬৭ উল্লেখ রয়েছে। এনআইডি নম্বর ১৯৬৭২৬৯২১০০০০৩৩ এবং ঠিকানা বাসা-৩৬৩, শেরেবাংলা রোড, সোনাডাঙ্গা, খুলনা-৯১০০।
শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ ও ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি একজন ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিত।
এদিকে, শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে মুশফিকুল ফজল আনসারী নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার ভেরিফায়েড প্রোফাইলে শেখ পরিবারকে লক্ষ্য করে পোস্ট করেন, “হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান… পিতার উত্তরাধিকার শেখ পরিবারের কী একটাবস্থা!”। তার এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এ ঘটনায় রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে জুয়েলের দ্বৈত পরিচয় এবং নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, কোনো নাগরিকের বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করা বা দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা আইনত নিষিদ্ধ। তবে শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ বা আইনি পদক্ষেপের খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা বা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্বাচন কমিশন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো পদক্ষেপের খবরও এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জনপ্রতিনিধিদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি জনগণের আস্থা অটুট রাখতে দ্বৈত নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে কঠোর তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া জরুরি।