ঢাকাশনিবার, ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রোহিঙ্গা হওয়ায় স্বীকৃতি পেল না জুলাই যোদ্ধা শহীদ নূর মোস্তফা

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ১৫, ২০২৫ ২:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কক্সবাজারের ঈদগাঁ থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হওয়া ১৭ বছর বয়সী নূর মোস্তফার নাম শহিদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র তার বাবা-মা রোহিঙ্গা হওয়ায় এবং তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় নূর মোস্তফাকে এই স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এমনকি তার পরিবারকে কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বা আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়নি।

নূর মোস্তফার বাবা শফিউল আলম ১৯৯২ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং কক্সবাজারের ঈদগাঁ এলাকায় স্থায়ী বসতি গড়েন। নূর মোস্তফার জন্ম বাংলাদেশেই। স্থানীয় দারুস সালাম দাখিল মাদ্রাসায় সে ১০ম শ্রেণীর ছাত্র ছিল।

৫ আগস্ট সকালে নূর মোস্তফা আন্দোলনে যোগ দিতে গোপনে বাড়ি থেকে বের হয়। বাবা-মাকে না জানানোর জন্য বন্ধুকে অনুরোধ করে সে বলে, “আন্দোলনে যে যাচ্ছে, বাবাকে যেন না বলে।” সেদিন দুপুরে ঈদগাঁ থানার সামনে পুলিশের গুলিতে নূর মোস্তফা গুরুতর আহত হয়। পিঠের মাঝখান দিয়ে গুলি ঢুকে বুক দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও ৬ আগস্ট দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

নূর মোস্তফার বাবা শফিউল আলম বলেন, “টাকার প্রতি আমার লোভ নেই। কিন্তু নূর মোস্তফার জন্ম, পড়াশোনা তো এই দেশেই। সব সার্টিফিকেট আছে তার। শহিদও হয়েছে এই দেশের জন্য। অথচ আমার ছেলের নামটা শহিদের তালিকা থেকে পর্যন্ত মুছে দেওয়া হলো!”

নূর মোস্তফার আত্মত্যাগের ঘটনায় স্থানীয়রা গভীর শ্রদ্ধা জানালেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তার কোনো স্বীকৃতি মেলেনি। তার পরিবারকে ফান্ড থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, রোহিঙ্গা হওয়ার কারণে নূর মোস্তফার মতো বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া এবং এ দেশের জন্য জীবন দেওয়া ব্যক্তিরা কেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থেকে বাদ পড়ছে?

নূর মোস্তফার বাবা-মা এবং স্থানীয়রা তার আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি ও সম্মান চেয়ে আসছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।