ঢাকাশনিবার, ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুঃস্কৃতিকারীরা আশকারা পাচ্ছে : রিজভী

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ১৪, ২০২৫ ৪:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতিকারীরা নানাভাবে উৎসাহ পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, “বর্তমান সময়ে নির্যাতিত আছিয়াকে ধর্ষণের পর মৃত্যুর ঘটনা কোনভাবেই দেশবাসী মেনে নিতে পারছে না। বর্তমান শাসনকালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূলে দ্রুত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। কিন্তু প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতিকারীরা নানাভাবে আশকারা পাচ্ছে। মানুষের সমবেত কণ্ঠস্বর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে। কিন্তু যদি ন্যায়বিচার অনুপস্থিত থাকে, তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পাবে। আইনের শাসনের শক্ত কাঠামো তৈরি করা হলেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রশাসন যদি যোগ্য, দক্ষ, ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও মানবিক না হয়, তাহলে সমাজে অন্যায়-অবিচার, খুন, জখম, নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকোপ জ্যামিতিক হারে বাড়বে। অবিলম্বে সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে প্রকৃত দুষ্কৃতিকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা জোরালো দাবি জানাচ্ছি, ধর্ষণে নির্যাতিত শিশু আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত নিশ্চিত করা হোক। আমি আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”

রিজভী বলেন, “বিগত ১৬ বছরের দুঃশাসনে আমাদের শান্তিপূর্ণ ও সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা বিকৃত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সামাজিক সংহতিকে বিনষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে সমাজকে পচন ধরা, দুর্গন্ধময় অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যের জমি দখল, লুটপাট, টাকা পাচারের মহা উৎসবের মধ্য দিয়ে নিজের সিংহাসন অটল রাখতে সব ধরনের নোংরামীকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনার শাসনামলে হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন, রাষ্ট্র ও সমাজের এমনই বিস্তার ঘটানো হয়েছিল, যাতে সভ্য, শিষ্ট ও সজ্জন মানুষের বসবাস করা বিপদজনক হয়ে পড়েছিল। সাধারণ মানুষকে লাঞ্ছিত করতে, দুর্দশায় ফেলতে তারা কোনো দ্বিধা করেনি। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অবমাননা, অতিকথন ও অপপ্রচারের মাধ্যমে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। যাবতীয় ভয়, হুমকি ও দুর্বিপাকের মধ্যেও দেশের নাগরিকদের জীবনযাপন করতে হয়েছে।”

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সেই ধারাবাহিকতায় এখনও নারী ও শিশু নির্যাতনকারীরা সুযোগের অপেক্ষায় ওৎ পেতে বসে আছে। সম্প্রতি মাগুরায় বোনের শ্বশুরবাড়িতে ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে তার শ্বশুর কর্তৃক ধর্ষণ এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু সারা জাতিকে বেদনাহত করেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সারা জাতির চোখ অশ্রুসজল। দীর্ঘ আওয়ামী লীগের শাসনে মানবিকতা, নৈতিকতা, ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার অদৃশ্য হয়ে গেছে। অপকর্মকারীরা অধিকাংশই আওয়ামী লীগের লোক, কারণ তারা জনসেবার চেয়ে আত্মসেবাকেই বড় করে দেখেছে।”

রিজভী আরও জানান, বিএনপি দেশব্যাপী (৮৪টি সাংগঠনিক রাজনৈতিক জেলা) নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং “নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনি ও স্বাস্থ্য সহায়তা সেল” গঠন করেছে।