কক্সবাজার জেলায় মরণব্যাধি এইডসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে এই রোগের সংক্রমণ বাড়ছে। যা ধীরে ধীরে পুরো কক্সবাজারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় এইচআইভি ভাইরাস বহনকারী রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ১৩৩ জন। তার মধ্যে রোহিঙ্গা ৯৭৪ জন ও স্থানীয় বাঙালি ১৫৯ জন। এইচআইভি ভাইরাস থেকে এইডসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪৫ জনের। তাদের মধ্যে রোহিঙ্গা ১৫২ জন ও ৯৩ জন স্থানীয় বাঙালি।
কক্সবাজারে জাতীয় এইডস এবং এইচআইভি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের কর্মসূচির আওতায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালের এআরটি সেন্টার ও উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এআরটি এইডসের এমন তথ্য জানিয়েছে।
এইচআইভি ভাইরাস শরীরে বহন করলেও বেশিরভাগ রোহিঙ্গা জানেন না এইডস কী এবং এর প্রতিরোধ কীভাবে করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে এসব রোগীর অবাধ চলাফেরায় এইডস ছড়িয়ে যাচ্ছে। এর ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উখিয়া কুতুপালং রহিঙ্গা ক্যাম্পের এক নারী জানান, এইডস নামে কোনো রোগের নাম আগে শুনেনি। এই রোগ কীভাবে হয় তাও তারা জানেন না। বালুখালী ক্যাম্পের এক যুবক জানান, শুনেছি এইডস একটা খারাপ রোগ, আমরা এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাই।
কুতুপালং ক্যাম্প ৪ রোহিঙ্গা যুবক লিয়াকত হোসেন জানান, এইডস সর্ম্পকে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে সচেতনতামূলক প্রচারনা চালানো হয়েছে। বেশিরভাগ রোহিঙ্গার এইডস নিয়ে কোনো জ্ঞান নেই। এ নিয়ে আরও সচেতনতামূলক প্রচারণা দরকার।
জানা গেছে, কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ও উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এআরটি সেন্টার থেকে এইচআইভি ভাইরাস বহনকারী ও এইডস আক্রান্তদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। কারাগারে থাকা ভাইরাস বহনকারীদেরও ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
সম্প্রতি ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সুবিধাত্বে আইওএম নামে একটি আর্ন্তজাতিক সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত কয়েকটা রিফিলিং সেন্টার করা হয়েছে। যার মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকেই ওষুধ সংগ্রহ করা যায়।
কক্সবাজার সিভিল সার্জনের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ ফাহিম আহমেদ ফয়সাল জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ক্যাম্পের প্রায় প্রতিটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে এইচআইভি পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যক্রম চালু রয়েছে।
মেডিকেল অফিসার আরও বলেন, ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএম’র পক্ষ থেকে ঘরে ঘরে এইচআইভি পরিক্ষার জন্য জাতীয় এইচআইভি প্রোগ্রাম প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাজেট বাস্তবায়ন হলে দ্রুত কার্যক্রম শুরু হবে।