খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের প্রায় পঞ্চাশ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিন দুপুর ২টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসের পকেট গেইট থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রদলের অনুসারীরা এই হামলায় জড়িত। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরও তা ফেরানোর চক্রান্ত চলছে। তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদলের দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে অপব্যবহার করে ফরম বিতরণের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তারা। এ সময় নেতাকর্মীদের ওপর শিবির ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
পুলিশ জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কিছু শিক্ষার্থী ছাত্রদলে যোগ দিচ্ছে বলে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে আজ দুপুরে ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের ওপর বহিরাগতরা হামলা চালায়।
এদিকে এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ছাত্রদলের নাম উল্লেখ না করে শিবির বলছে, একটি দল পুনরায় ক্যাম্পাসে দখলদারি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করেছে। তারা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান।
কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধসহ ৪ দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়।
বিভিন্ন মিডিয়া ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাত্রদল বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে এ হামলায় নেতৃত্ব দেন। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।
বিবৃতিতে ছাত্রশিবির নেতারা বলেন, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুনভাবে ছাত্ররাজনীতির ইতিবাচক ধারা তৈরির যে সুযোগ এসেছে, সেই সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করতে একটি দল পুনরায় ক্যাম্পাসে দখলদারি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করেছে। তারা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের ওপর তাদের এই ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমরা আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে, হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে এবং শিক্ষাঙ্গনে পুনরায় ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা প্রতিহত করতে প্রশাসনকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
নেতারা আরও বলেন, আমরা লক্ষ করেছি একটি ছাত্রসংগঠন নিজেরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে বরাবর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের স্টাইলে ছাত্রশিবিরের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা এমন ঘটনায় বিস্মিত ও গভীর উদ্বিগ্ন। আমরা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করছি।