ঢাকাবুধবার, ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চবি প্রক্টরের বক্তব্যে বিদ্বেষমূলক মনোভাবের অভিযোগ

চবি প্রতিনিধি | সিটিজি পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫ ৯:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

একপেশে সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রক্টর অধ্যাপক তানভির এম এইচ আরিফের সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বিপ্লবী ও রাজনৈতিক কর্মীদের ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলার ইঙ্গিত দেন এবং ‘পল্টিবাজি’ শব্দটি ব্যবহার করে তাদের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেন।

 

প্রক্টরের বক্তব্যটি ছিল—

 

“বিপ্লবীরাও কি হানি ট্র্যাপে? নাহলে কি দেখলাম! পল্টিবাজি কেন? (এই মন্তব্য আমার অভিজ্ঞতা হতে এবং অনেক পর্যবেক্ষণ হতে যারা সকালে এক কথা আর বিকালে আরেক কথা বলে। আমার বক্তব্যের সমালোচনাকারির জন্য কিংবা ভিন্নমতের কারণে নয়। যদিও অনেকে ভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে।)”

 

এই বক্তব্যের পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সামাজিক-রাজনৈতিক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সমালোচকদের মতে, এটি বিদ্বেষমূলক ও ছাত্র আন্দোলনকে হেয় প্রতিপন্ন করার প্রয়াস। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হয়ে প্রক্টরের এই ধরনের ‘ঘৃণ্যজাতকরণমূলক’ মন্তব্য দায়িত্বহীন ও অনৈতিক বলে অভিহিত করেছেন অনেকে।

 

জমির সালেহিন নামের এক শিক্ষার্থী সিটিজিপোস্টকে জানিয়েছেন, “একজন প্রশাসনিক দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য কেবলই বিদ্বেষমূলক প্রচারণা। এটি আন্দোলনকারীদের প্রতি এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ প্রয়োগের কৌশল।”

 

অন্যদিকে, শিক্ষক সমিতির একাংশও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, প্রশাসনের দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা, তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো নয়।

 

বিশ্লেষকদের মতে, ‘হানি ট্র্যাপ’ শব্দটি সাধারণত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য মূলত তাদের প্রতি সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরির কৌশল।

 

এই বিতর্কের পর অধ্যাপক তানভির তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা আরও অস্পষ্টতা তৈরি করেছে। তিনি দাবি করেছেন, এটি ভিন্নমতের বিরুদ্ধে ছিল না, বরং ‘পর্যবেক্ষণের’ ফল। তবে, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের একাংশ বলছে, প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা কারো এমন ‘পর্যবেক্ষণ’ কেবল পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাবকেই প্রকাশ করে।

 

এই ঘটনায় চবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা এখনো আসেনি। তবে, শিক্ষার্থীদের একাংশ প্রক্টরের বক্তব্যের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তার পদত্যাগের দাবি তুলেছে।

 

এ বিষয়ে উপাচার্যের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা, যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ব্যক্তিরা দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকেন।