চট্টগ্রামের মিনি ইন্ডিয়াখ্যাত চেরাগি পাহাড়ের আজাদী গলিতে আজ “দ্য কমন রান” নামক সোশিও-কালচারাল একাডেমিক প্রজেক্টের উদ্যোগে শেখ হাসিনাবিরোধী পোস্টারিং কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজকরা একে “বউতদিন হাইয়্যু, আর ন হাইয়্যু” শিরোনামে অভিহিত করেন, যা দীর্ঘদিনের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যাব্যাপী পোস্টারিং এর মাধ্যমে এই আয়োজন করা হয়।
পোস্টারিংয়ে শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্র, ভোটাধিকার হরণ এবং ভারতের প্রতি তাঁর নির্ভরশীলতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বার্তা তুলে ধরা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থী, রিকশাচালক, সিএনজি চালক, গৃহকর্মী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন ছিলেন, যারা নিজেদের দুঃখ-কষ্ট ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মনসুর আলী নামের এক রিকশাচালক বলেন, “আমাদের ঘাম ঝরে, কিন্তু সব সুবিধা যাইতো মামা ওদের পকেটে। এই জুলুম আর খোদায়ও সয় নাই। উন্নয়নের জোয়ার দিয়া ভাসায়ালাইসে।”
রায়হান সাফাত নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী জানায়, “পড়াশোনার খরচ আকাশছোঁয়া, অথচ হাসিনা সরকার উন্নয়নের গল্প শোনাইছে সারাজীবন। জুতা মারি তার কথিত উন্নয়নের গালে, আমাদের ভাইদের বুকে গুলি চালাইসে আমাদের টাকা দিয়ে।”
আয়োজকদের দাবি, এই কর্মসূচি সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তাঁদের মতে, “এই সেই আজাদী গলি, যেখানে একদিন এক ভণ্ড গুন্ডা সাংবাদিক ঋত্বিক নয়ন আমাদের বিক্রি করেছিল, যেখানে এক বোন বজ্রকণ্ঠে চিৎকার করেছিল—”তোমরা জানো আজাদী মানে কী?” আজাদী মানে আজাদী গলির মুখে দাঁড়িয়ে কসাই হাসিনার দিকে জুতা ছুঁড়ে মারা! লানত পড়ুক এই জালিমের উপর। এই জালিমকে, জালিমের দোসরদেরকে প্রতিহত করতে হবে।
তাঁরা আরো জানান, “এই পতিত নমরুদ জননী অনেক খেয়েছে, জ্বালিয়েছে এই চট্টগ্রামের মানুষকে। আমরা অবশ্যই একাডেমিক, কিন্তু জুলুমের বিরুদ্ধে সর্বদা জিরো টলারেন্স। সুশীল না, সংগ্রামী। আমরা ইনকিলাবের পক্ষের লোক।”
চট্টগ্রামে স্বতঃস্ফূর্ত এই গণপ্রতিবাদে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, দীর্ঘদিনের দমননীতির বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। “বউতদিন হাইয়্যু, আর ন হাইয়্যু”—এই স্লোগান যেন এখন শুধুই একটি পোস্টারের বার্তা নয়, বরং জুলাই’২৪ গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিধ্বনি