বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ২ উইকেটে হারিয়েছে চিটাগং কিংস। খাজা মোহাম্মদ নাফির অর্ধশতক ও হুসেইন তালাতের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পরেও শেষ দিকে বল ও রানের দ্বিগুণ পার্থক্য থাকায় টানটান উত্তেজনায় চলে আসে ম্যাচ। শেষ বলে জয়ের জন্য চিটাগংয়ের প্রয়োজন হয় ৪ রান। অবশেষে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন আলিস।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে চিটাগংকে ১৬৪ রানের টার্গেট দেয় খুলনা।
নির্দিষ্ট রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় চিটাগং। হাসান মাহমুদের করা প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে নওয়াজের তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন ওপেনার পারভেজ হোসেইন ইমন।
দলীয় ৩৫ রানে চিটাগং শিবিরে দ্বিতীয়বারের মতো আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। এবার তার শিকার গ্রাহাম ক্লার্ক। ব্যক্তিগত ৪ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
ইমন-ক্লার্ক বিদায় নিলে তালাত-নাফায় মিলে গড়েন ৭০ রানের দুর্দান্ত জুটি। ব্যক্তিগত ৪০ রানে নাসুমের শিকার হন তালাত। এরপর একে একে বিদায় নেন শামীম-নাফায়-তালাত। ১১৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে চিটাগং।
আরাফাত সানি ও আল ইসলামের ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে ১৮ ও ১৭ রান। শেষ ওভারের জয়ের জন্য চিটাগাং কিংসের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। মুশফিক হাসানের করা ওভারের প্রথম বলে চার মেরে কিংস ভক্তদের স্বপ্ন দেখান আরাফাত সানি। তৃতীয় বলে আলিস আল ইসলাম রিয়ার্ড হয়ে ওঠে গেলে উইকেটে এসে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান শরিফুল। তবে পরের বলেই আউট হয়ে যান তিনি। ফলে আবারও মাঠে নামেন আলিস। তখন সমীকরণ দাঁড়ায় এক বলে চার রানে। শেষ বলে ডিপ এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মেরে সেই সমীকরণ মিলিয়েছেন আলিস। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এ ব্যাটার।
খুলনার পক্ষে ৩টি করে উইকেট তুলে নেন মুশফিক ও হাসান মাহমুদ। ২টি উইকেট পান নাসুম আহমেদ।
এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই খেই হারায় খুলনা। দলীয় ১১ রানেই টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে হারায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ব্যক্তিগত ২ রানে ফার্নেন্দোর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক মেহেদী মিরাজ। শূন্য রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অ্যালেক্স রস।
এরপর আফিফকে নিয়ে ২৩ রানের জুটি গড়েন মোহাম্মদ নাঈম। তবে খালেদ আহমেদের ডেলিভারিতে কুপোকাত হন নাঈম। ব্যক্তিগত ১৯ রানে বিদায় নেন তিনি। আরাফাত সানির বলে শামীম হোসেনের তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন আফিফও।
৪২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো বিপর্যয়ে পড়ে খুলনা। এরপর হেটমায়ার-অংকন মিলে গড়েন ৬১ রানের পার্টনারশিপ। শরিফুলের বলে ব্যক্তিগত ৪১ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন অংকন। অপর প্রান্তে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন হেটমায়ার। ২৯ বলে অর্ধশতক তুলে নেন এ ক্যারিবীয় ব্যাটার।
শেষ পর্যন্ত ৩৩ বলে ৬৩ রানে বিদায় নেন হেটমায়ার। হোল্ডার ও নওয়াজের ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে ১২ ও ৫ রান। শেষ পর্যন্ত ১৬৩ রানে শেষ হয় খুলনার ইনিংস।
চিটাগংয়ের পক্ষে ২টি করে উইকেট তুলে নেন ফার্নেন্দো। এছাড়া একটি করে উইকেট পান শরিফুল, আল ইসলাম, খালেদ আহমেদ ও আরাফাত সানি।
প্রায় ১২ বছরের বিরতির পর চলতি আসরে বিপিএলে ফিরেছে চিটাগং কিংস। ২০১৩ সালে সবশেষ অংশ নিয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সেবার ফাইনালে উঠলেও ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের কাছে ৪৩ রানে হেরেছিল মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বাধীন দল।
আগামী শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরে শিরোপা নির্ধারণী মেগা ফাইনালে ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি হবে চিটাগং কিংস। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে ম্যাচটি।