ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর—এই বাক্যটা এতবার শুনেছেন যে এখন মনে হয় ধোঁয়ার সঙ্গেই মিশে গেছে। কিন্তু সমস্যা হলো, অভ্যাস তো এক দিনে যায় না! যারা ছাড়তে পারছেন না, তারা কি তবে ফুসফুসের সঙ্গে প্রতারণা করেই যাবেন? একদম না! কিছু কৌশল রপ্ত করলে ক্ষতি কমানো সম্ভব। চলুন, ধোঁয়াটে জীবনে একটু স্বস্তির বাতাস ঢুকিয়ে দিই।
প্রথমেই পানি! শুনতে সাধারণ লাগলেও, এটি কিন্তু ফুসফুসের বড় বন্ধু। ধোঁয়ার সঙ্গে শরীরে যে বিষ ঢোকে, তা বের করার সবচেয়ে সহজ উপায় প্রচুর পানি পান করা। ধোঁয়া গেলে না যাক, টক্সিন অন্তত ধুয়ে ফেলুন। এরপর খাবারের দিকে নজর দিন। হলুদ, আদা, রসুন, কমলা লেবু—এসব শুধু রান্নাঘরের গর্ব নয়, ফুসফুসেরও প্রিয়। বিশেষ করে হলুদে থাকা কারকিউমিন তো ধূমপায়ীদের জন্য আশীর্বাদ!
শুধু খাওয়া-দাওয়া দিয়ে হবে না, একটু শরীরও নাড়াতে হবে। হাঁটাহাঁটি, দৌড়ানো বা সাইক্লিং করলে ফুসফুস দম নেয়ার জায়গা পায়। আর যদি একটু শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম (যেমন প্রণায়াম) করতে পারেন, তাহলে ফুসফুস আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে—যদিও সে কথা বলতে পারে না!
আরেকটা জরুরি বিষয় হলো, বাইরের দূষণ এড়িয়ে চলা। ফুসফুস এমনিতেই ধোঁয়ায় ভরা, তার ওপর ধুলাবালি গেলে অবস্থা শোচনীয়। তাই সম্ভব হলে নির্মল বাতাসে থাকুন, দরকার হলে ঘরে এয়ার পিউরিফায়ার রাখুন।
এবার আসুন, একটু চায়ের আড্ডা দেওয়া যাক। ধূমপানের পরপরই যদি এক কাপ গ্রিন টি বা ব্ল্যাক কফি পান করেন, তাহলে কিছুটা ক্ষতি কমতে পারে। গবেষণা বলছে, এতে শরীরের নিকোটিন দ্রুত বেরিয়ে যেতে সাহায্য হয়। যদিও “চা-কফি খেলেই সব ঠিক”—এমন ভাবার দরকার নেই!
শেষ কথা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। ফুসফুস কিন্তু চুপচাপ ক্ষোভ পুষে রাখে, হুট করেই বিদ্রোহ করতে পারে! তাই কাশি বা শ্বাসকষ্ট দীর্ঘদিন চললে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তবে দিনের শেষে একটাই কথা—ধূমপান ছাড়াই যদি বাঁচতে পারেন, সেটাই সেরা উপায়। কিন্তু যদি ছাড়তেই না পারেন, তাহলে অন্তত নিজের ফুসফুসের সাথে একটু সদয় হোন। শেষমেশ ওটাই তো আপনাকে বাঁচিয়ে রাখবে, নাকি?