প্রতিবছরের মতো থার্ট ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি-পটকা না ফুটানো এবং ফানুস না উড়ানোর অনুরোধসহ নগরবাসীর প্রতি ১৩টি নির্দেশনা দিয়েছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি)। তবে কেবল ‘নিষিদ্ধ ঘোষণাতেই’ সীমাবদ্ধ নগর পুলিশের এই কার্যক্রম। প্রতিবারই পুলিশের এই নির্দেশনার পরেও বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ছাদ এবং সড়ক-অলিগলিতে এই ‘শব্দবোমা’র ব্যবহার দেখা যায়। এর বিকট শব্দ আতঙ্ক ছড়ায় শিশু, বয়ষ্ক এবং পশু-পাখিদের মধ্যে।
নগরের বক্সিরহাটে প্রবেশ করতেই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় হাঁক-ডাক দিয়ে আতশবাজি কেনার আমন্ত্রণ জানাচ্ছিলেন এক ব্যবসায়ী। দোকানের সামনে ঝুলিয়ে এবং থাকে থাকে সাজিয়ে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে ‘নিষিদ্ধ’ এসব আতশবাজি, পটকা ও ফানুস। দেশে বিদ্যমান আইনে বিস্ফোরকদ্রব্য বহন, আমদানি ও ক্রয় করা নিষেধ থাকলেও নগরজুড়ে হাতের নাগালেই মিলছে এসব পণ্য।
সমাজের সচেতন মহলের মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গা ছাড়া ভাব এবং উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের অভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব বিক্রি করছেন।
পুলিশ বলছে, নগরবাসী সচেতন না হলে শুধু আইন প্রয়োগ করে আতশবাজি বিক্রি কিংবা ব্যবহার থামানো সম্ভব নয়। জনগণের দায়িত্ব তাদের নির্দেশনা মান্য করা। তবে যেসব জায়গায় আতশবাজি বিক্রি হচ্ছে খোঁজ নিয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সরেজমিনে সোমবার নগরের কোতোয়ালী থানার বক্সিরহাট এলাকার কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, থার্টি ফার্স্ট নাইটের আনন্দ উল্লাসের অংশ হিসেবে আতশবাজি ও পটকা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে প্রায় দোকানে। কোনো রাখঢাক তো নেই—উল্টো গ্যারান্টি দিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, ‘পুলিশ সমস্যা করবে না’। কিশোর-তরুণদের পাশাপাশি প্রাপ্ত বয়স্করাও আতশবাজি-পটকা কিনতে ভিড় করছেন দোকানগুলোতে।
ক্রেতা সেজে দোকানটিতে প্রবেশ করা মাত্র বিভিন্ন রকমের বাজির ফিরিস্তি তুলে ধরেন তিনি। ওই বিক্রেতা বলেন, ‘আমার চেয়ে বেশি বাজি বক্সিরহাটে কেউ বিক্রি করে না। আপনি যেমন চাইবেন সবরকমের দেওয়া যাবে। ২০ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত দামের বাজি আছে আমার কাছে। বোমার চাইতেও বেশি আওয়াজ হবে। আর তিন রঙের আলো হবে।’
কোত্থেকে এসব আনেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো ভারতীয় বাজি। ঝর্ণা বাজি, রকেট বাজি, আইপিএল বাজি, তারাবাতি, জরি বাজি, আকাশ রকেট—এমন অনেক রকমের আতশবাজি এবং পটকা আছে আমার দোকানে।’
নেওয়ার সময় পুলিশ ধরবে কিনা—জানতে চাইলে তিনি অট্টহাসি ছেড়ে বলেন, ‘গ্যারান্টি দিয়ে দিব, পুলিশ ধরবে না। এখানে সব দোকানেই তো বিক্রি হচ্ছে। আমরা বিক্রি করিতো প্রতিদিন।’