শুক্রবার সকালে রমিজ উদ্দিন খাঁ’র মুখে ফুটে উঠল এক অদ্ভুত হাসি। চা-এর কাপ হাতে নিয়ে তিনি বন্ধু মহিন উদ্দিনকে বললেন, “দোস্ত, এই যে ভারতীয় মিডিয়ার খোঁজখবর রাখিস, রিউমর স্ক্যানারের আজকের রিপোর্ট পড়ছিস?”
মহিন উদ্দিন কিছুক্ষণ ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থেকে বলল, “পড়ছি রে, কি অদ্ভুত সব কাণ্ড! মানে, আমাদের দেশের রাজনীতি নিয়েও যে ওরা এরকম বিজ্ঞান কল্পকাহিনি রচনা করতে পারে, ভাবতেই অবাক লাগে।”
রমিজ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “সবচেয়ে মজা কী জানিস? একেকটা রিপোর্ট পড়ে মনে হচ্ছে, যেন হরর ফিল্মের স্ক্রিপ্ট লিখছে! ‘শেখ হাসিনার খোলা চিঠি’ তো দেখলাম সরাসরি বলিউডের প্লট হতে পারত!”
মহিন চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে বলল, “আর এই যে ‘ড. ইউনূস আইসিইউতে’, কিংবা ‘পাকিস্তানি অস্ত্রবাহী জাহাজ’, এগুলো না… ওদের দাদা বুড়োরা গানের ফাঁকে ফাঁকে চায়ের দোকানে বসে গল্প ফেঁদেছিল। পরে বাচ্চারা টাইপ করে মিডিয়ায় পাঠিয়েছে!”
রমিজের মুখে দুষ্টুমি ভরা হাসি। “তুই বললি তো! এইসব গুজব ছড়ানোর লিগ টেবিলেও দেখি রিপাবলিক বাংলা শীর্ষে! পাঁচটা গোটা গল্প বানিয়ে বসে আছে। আহা, পুরস্কার দিলে দিতাম, ‘গল্পবাজ পুরস্কার ২০২৪’!”
মহিনের মুখ হাসিতে গদগদ। “তুই জানিস, এই ধরনের খবরে কারা বিশ্বাস করে? সেইসব মানুষ, যারা ভোরে উঠে দুধের সাথে চিনি মিশানোর বদলে লবণ মিশায় আর ভাবে কেন চা মিষ্টি হলো না!”
রমিজ চোখ ছোট করে বলল, “আর ভারতীয় মিডিয়া কী করে জানিস? তারা সেই লবণ মেশানো দুধ দিয়ে পুরো চায়ের বাজার চালায়!”
এভাবেই রমিজ আর মহিন দু’জন মিলে বাংলাদেশকে ঘিরে ছড়ানো ভারতীয় গুজবগুলো নিয়ে হাসিঠাট্টা করে যাচ্ছিল। তাদের কথোপকথনের মধ্যে উঠে আসছিল হাসিনার ‘খোলা চিঠি’র মতো অবাস্তব কাহিনির মিথ্যাচার, ড. ইউনূসের ‘ফ্রান্সে পালানো’র মতো সাই-ফাই গল্প, আর মুসলিম-বিরোধী ভিডিওগুলোর মতো বিভ্রান্তিকর গল্পের রাজনীতি।
শেষমেষ মহিন মাথা নেড়ে বলল, “তুই বলিস না, রমিজ, এসব যদি রিউমর স্ক্যানার না ধরত, আমাদের দেশের মানুষও হয়তো ভাবত, হাসিনা আপা এখন দিল্লির বায়ু দূষণে চিঠি লিখছেন!”
রমিজ হেসে উঠে বলল, “দোস্ত, এই গল্পগুলো কিন্তু আসলেই একটা বড় শিক্ষার জায়গা। গুজবে ভাসা নয়, সত্য যাচাই করাই আমাদের চায়ের কাপে আসল চিনি!”