কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত স্ট্রিটফুড পরিবেশন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি করতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কোস্ট ফাউন্ডেশন।
বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র, যা পর্যটকদের অনন্য স্ট্রিট ফুডের স্বাদ দেওয়ার জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। বিশেষ করে ফিশ ফ্রাই বিক্রয়ের ভ্যান সমূহ পর্যটকদের কাছে অধিক জনপ্রিয়, যেখানে তারা সামুদ্রিক মাছের বিভিন্ন রেসিপি উপভোগ করতে পারে। কিন্তু, প্রচুর পর্যটকের চাপ এবং পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার অভাবে স্ট্রিটফুড বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি এবং পরিবেশের পরিচ্ছন্নতার মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সরেজমিনে ঐসব এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বিক্রেতারা ময়লা এবং নোংরা পরিবেশে খাবার প্রস্তুত করছে এবং তা অস্বাস্থ্যকরভাবে পরিবেশন করছে। সমুদ্র পাশ্ববর্তী ভালো মানের এমন খাবারের দোকান কম থাকায় পর্যটকেরা এক প্রকার বাধ্য হয়েই এসব খাবার গ্রহণ করছেন।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সহযোগিতায় কোস্ট ফাউন্ডেশন আর এম টি পি হেলদি স্ট্রিট ফুড উপ-প্রকল্প ২০২৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন করে আসছে। প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পর্যটনমুখর এলাকা যেমন কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবনী পয়েন্টের স্ট্রিট ফুডের মান বৃদ্ধি এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে স্ট্রিটফুড ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়মিত সাক্ষাত করে তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের জন্য উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন।
এরই ধারাবাহিকতায়, স্ট্রিটফুড বিক্রির পরিবেশ এবং পরিবেশনের মান উন্নয়নে প্রকল্প হতে নির্বাচিত ৮ জন ফিশ ফ্রাই বিক্রেতাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। উক্ত সহায়তার অর্থে বিক্রেতারা উন্নতমানের ভ্যান নির্মাণের পাশাপাশি উন্নত বার-বি-কিউ চুলা, খাবার দূষণ প্রতিরোধে পৃথক কাটিং টেবিল, খাবার তৈরী এবং পরিবেশনের জন্য উন্নতমানের তৈজসপত্র, ময়লা আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিন, কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রাখতে অ্যাপ্রন, মাথার টুপি, হ্যান্ড গ্লোভস ইত্যাদি ক্রয় করেন এবং নিয়মিত ব্যবহার করছেন। যার ফলে সহায়তা প্রাপ্ত বিক্রেতারা বর্তমানে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে ফিশ ফ্রাই উৎপাদন এবং পরিবেশন করতে পারছেন যা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য ভূমিকা পালন করছে। নির্বাচিত উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে ৫০ জন ফিশ ফ্রাই বিক্রেতাকে বিনামূল্যে ডাস্টবিন, অ্যাপ্রন, মাথার টুপি, হ্যান্ড গ্লোভস প্রদান করা হয়।
এছাড়াও, ইতপূর্বে কোস্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃক কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবনী পয়েন্ট এলাকার ৫০ জন ফিশ ফ্রাই বিক্রেতাকে দিনব্যাপী প্রশি¶ণ প্রদান করা হয়েছিল। উক্ত প্রশিক্ষণে তাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরী এবং পরিবেশন সম্পর্কে ব্যবহারিক ধারণা প্রদান করা হয়।