‘ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান, আওয়ামী লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, ভারত যাদের বাবার বাড়ি বাংলা ছাড় তাড়াতাড়ি, দিল্লি না ঢাকা/ ঢাকা ঢাকা, উগ্রবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও কাজীর দেউড়ি এলাকায় এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকশ কর্মী-সমর্থকদের।
মূলত, নগরীর হাজারী লেনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ ও হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে সংগঠনটি।
এ সময় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শহীদুল হক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় রাসেল আহমেদসহ আরও কয়েকজন সংগঠক বক্তব্য রাখেন।
চবি শিক্ষক শহীদুল হক তার বক্তব্যে বলেন, একটি উগ্রবাদী সংগঠন (ইসকন) সম্প্রীতির চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা বাঁধাতে চায়। আমরা চাই না, বাংলাদেশ ফিলিস্তিন হোক। আমরা চাই না, বাংলাদেশ কাশ্মির হোক। আমরা চাই না, বাংলাদেশ মিয়ানমার হোক। এ দেশের কোটি কোটি মুসলমান, আমরা শান্তিপ্রিয়। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি। এ কারণে আমরা ছোটবেলায় হিন্দু শিক্ষকের কাছে যেমন পড়েছি, একইসঙ্গে হিন্দু ভাইয়েরা মুসলমান শিক্ষকের কাছে পড়েছে। কখনোই সাম্প্রদায়িক উসকানি দিইনি।
সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, কিছু উগ্রবাদী সংগঠন আওয়ামী লীগের দালাল হয়ে, আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে আমাদের দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। আমাদের সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা যখন আওয়ামী ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম, তখন এই সেনাবাহিনী আমাদের সহযোগিতা করেছিল। তাদের ওপর উগ্র সন্ত্রাসী সংগঠন হামলা করেছে। হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমাদের এই দেশকে যদি অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হয়, সেই ষড়যন্ত্র আমরা রুখে দেবো। ষড়যন্ত্রকারীদের ঠাঁই এ বাংলার মাটিতে হবে না। যেদিকে পা বাড়াবেন, সেই পা আমরা ভেঙে দেবো।
হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, সভা-সমাবেশ করা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আমরা দেখেছি, ইসকন কিংবা এ ধরনের সংগঠন যখন সমাবেশ করে, তাদের পেছনে অনেক আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ কিংবা তাদের দোসরেরা থাকে। তাদের নিয়ে সতর্ক হবার আহ্বান জানাচ্ছি। আপনাদের সব যৌক্তিক দাবিতে আমাদের সমর্থন থাকবে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে হাজারী লেনে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামলাতে গেলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ ও হামলার ঘটনা ঘটে। আহত হন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ১২ সদস্য। রাতে যৌথবাহিনী হাজারী লেনে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ৮০ জনকে আটক করে। তবে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে ৮২ জনকে আটকের তথ্য দেওয়া হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সমর্থকরা জড়িত বলে জানিয়েছে।