মাসখানেকের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি-মন্ত্রীরা এখন ১৪ সিকের বাসিন্দা। সরকার পতনের আগেও যারা বিলাসবহুল জীবন এবং বিলাসিতায় মগ্ন ছিলেন তারা এখন দিন কাটাচ্ছেন চার দেয়ালকে সঙ্গী করে।
৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় ওজু করতে গিয়ে কারা শৌচাগারে পা পিছলে পড়ে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ ২০ দিন ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে। সেখান থেকে ২৮ অক্টোবর চিকিৎসা শেষে তাঁকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে। গত বুধবার তাঁর তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তবে পুলিশ ওই দিন থেকে ৭ দিনের মধ্যে ‘সুবিধাজনক সময়ে’ তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের প্রিজন সেলে থাকাকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এ নেতা নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ, দোয়া-কালামে মশগুল ছিলেন। সেখানে তার নিকটাত্মীয় পরিচয়ে একজন দেখা করলেও স্বজনরা মামলার ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী মানসিকভাবে লতিফ বেশ ‘সুস্থ’ রয়েছেন বলে তাঁর সঙ্গে দেখা করা ওই নিকটাত্মীয় সূত্রে জানা গেছে। নেতাকর্মী ও আত্মীয়স্বজনকে মনোবল শক্ত রাখতেও বলেছেন তিনি। মনোবল না হারিয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার পরামর্শ তাঁর। অন্যান্যদের মতো লতিফের ডিভিশনও বাতিল হয়েছে। তবে জেল কোড অনুযায়ী, সব সুবিধা তিনি পাচ্ছেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর নগরের মাদারবাড়ি এলাকার এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য লতিফ। স্থানীয় মসজিদে জুমার নামার শেষে বের হওয়ার সময় বিএনপি নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন তিনি। এরপর আবার গিয়ে ওই আত্মীয়ের বাসায় উঠলে সেই বাড়িও ঘিরে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। ওইদিন সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এরপর ১৭ আগস্ট নগরের বায়েজিদ বোস্তামী মাজার গেট এলাকা থেকে এম এ লতিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে ডবলমুরিং থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে হত্যার মামলাসহ মোট ১২টি মামলা হয়েছে।