চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে পড়ে থাকা প্রায় আট হাজার নিলামযোগ্য কনটেইনারের মধ্যে ৩৩৫টি বিপজ্জনক, যার মধ্যে ধ্বংসযোগ্য রয়েছে ৪৮টি। বিভিন্ন রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের বিস্ফোরক কনটেইনার রাখতে বাড়তি খেয়াল রাখতে হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে। এতে কনটেইনার জট মেনে বাড়তি ব্যয় গুনতে হচ্ছে। তাই কনটেইনারগুলো দ্রুত অপসারণ চায় সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ (এনসিটি) বিভিন্ন ইয়ার্ডে সংরক্ষণ করা যায় ৫৩ হাজার ৫১৮ কনটেইনার। এরমধ্যে এনসিটির ৬ নম্বর শেডে রয়েছে থিনার, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, সেডিয়াম সালফেট, ছাপার কালি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াশিং এজেন্টসহ বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্যে ২০ ফুটের ২৮টি এবং ৪০ ফুটের ৩৬টি কনটেইনার। এছাড়া বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে রয়েছে ছড়িয়ে থাকা ২৭০টি কনটেইনার, যার মধ্যে কিছু কনটেইনার প্রায় ২২ বছরের বেশিদিন ধরে বন্দরে পড়ে আছে। এতে ২৮৭টি নিলামযোগ্য হলেও বাকি ৪৮টি ধ্বংসযোগ্য কনটেইনার বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।
কনটেইনারগুলো ধ্বংস ও খালাসের বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র ও উপ-কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘যেগুলো নিলামের মাধ্যমে খালাস করা যাবে, সেগুলো খালাসের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সময়ে খালাস হয়ে যাবে বলে আশা করছি। কিন্তু ধ্বংস করাটা অনেক বড় সমস্যা। এর প্রধান সমস্যা হলো জায়গা না থাকা। আমাদের কাস্টমসের পচনশীল পণ্যের ধ্বংসেরও জায়গা নেই। এরপরও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ময়লার ডিপোতে (আনন্দবাজার) আমরা বেশ কিছু কনটেইনার ধ্বংস করেছি। কিন্তু পণ্য ধ্বংসের জায়গা না থাকায় বিপজ্জনক পণ্যগুলো নিয়ে আমরা খুব ঝামেলায় আছি। তবে এ নিয়ে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) সিদ্ধান্ত জানাবে।’
এ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ও সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘ইয়ার্ডে এখন প্রায় আট হাজার নিলামযোগ্য কনটেইনার পড়ে আছে। এরমধ্যে তিনশর বেশি কনটেইনার বিপজ্জনক। এগুলোতে দাহ্য পদার্থ আছে, যা দ্রুত ধ্বংস করা উচিত। এসব বিপজ্জনক কনটেইনারের কারণে বাড়তি নিরাপত্তা নিতে হচ্ছে। ইয়ার্ডের বড় অংশজুড়ে নিলামের কনটেইনার পড়ে থাকায় নতুন কনটেইনার সংরক্ষণও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই জট নিরসনে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও এনবিআরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও এনবিআর চেয়ারম্যানকে কনটেইনারগুলো দেখানো হয়েছে।’
নিলাম ও ধ্বংসের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘আমরা কনটেইনারগুলো রিলিজ করতে কাজ করছি। গতকাল (রবিবার) ২২৭টি কনটেইনার থেকে ৪টি খালাস হয়েছে। এখানে ৪৮টি কনটেইনার ছাড়া বাকিগুলো নিলামযোগ্য। নিলামযোগ্য কনটেইনারগুলো ছাড়া বাকিগুলো ধ্বংসের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। দ্রুত সময়ে ধ্বংসের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশা করছি।’