ঢাকাশনিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অবশেষে নিষিদ্ধ হলো গাধাদের গ্যালারিতে ভেসে যাওয়া মুখোশের দল! 

সাজিদ সামী চৌধুরী | সিটিজি পোস্ট
অক্টোবর ২৩, ২০২৪ ১১:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজ বুধবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আনন্দঘন সংবাদ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

ছাত্রলীগ, যাদের ভূমিকা জাতীয় মুক্তিযুদ্ধে যতটা না ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল দুর্নীতির মাঠে “সাক্সেস স্টোরি” লেখা। তাদের নিষিদ্ধ করা হলো, যেন ছাত্রসমাজকে একটু শান্তি দেয়া যায়। কারণ, সম্প্রতি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের ‘মার্শাল আর্ট’ প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন, সেখানে নিষেধাজ্ঞার এই সুসংবাদ সত্যিই এক শান্তির সুবাস বয়ে আনে। অবশেষে, এই “সন্ত্রাসের আখড়া” হিসেবে খ্যাত সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিশ্চয়ই এটি একটি নতুন মাইলফলক, যেখানে সরকার বুঝতে পেরেছে, ছাত্রলীগ শুধু ছাত্রদের নয়, বরং পুরো জাতির জন্য এক ভয়াবহ হুমকি!

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, এবং সিট বাণিজ্যে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করেছে। তাই সরকার আজ এক সুষ্ঠু সিদ্ধান্ত নিয়ে, এই ‘শান্তির বাহিনী’কে নিষিদ্ধ করেছে। হয়তো তাদের ক্রমবর্ধমান ‘এক্সেলেন্স’ দেখে সরকারও বুঝে ফেলেছে যে, জনগণের নিরাপত্তা এদের হাতে নয়, বরং বন্দুকের গুলির গতিতে। যেন তারা কোনো পদ্মপাতার মতো ঝরে পড়েছে। বলা চলে, ছাত্রলীগের কার্যক্রম এমন ছিল যে, তারা অন্য সংগঠনগুলোর জন্য ‘মডেল’ হতে চাইলে, নিরাপত্তা বাহিনী তাদের পেছনে দৌড়ানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। এখন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি মিলে একটি সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের নিষিদ্ধকরণ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। কিন্তু সরকার যে অল্প সময়ের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন করেছে, তা কিন্তু এক বিশেষ কৃতিত্ব! এটি প্রমাণ করে যে, যখন জনগণের জীবন বিপন্ন, তখন সরকারের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগে না।

গত ১৫ জুলাই থেকে চলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যে ‘শান্তিপূর্ণ’ আগ্রাসনের মাধ্যমে নিরীহ ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছেন, তার যথেষ্ট প্রমাণ সরকার কাছে রেখেছিল। ৫ আগস্টের পরও তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার তথ্য রয়েছে। সুতরাং, সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর তফসিল-২–তে ছাত্রলীগের নাম অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছে। এটি এমন এক সতর্কতা, যা জাতীয় স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের কর্মীরা রীতিমতো “জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের” কাজে হাত দিয়েছে। মানে, ছাত্রদের ‘মারধোর’ করা তাদের কাছে একটা ‘জনহিতৈষী’ উদ্যোগ ছিল। এরই মধ্যে হাজার হাজার নিরপরাধ ছাত্রের জীবন শেষ করেছে তারা, এবং সত্যি বলতে, তারা যখন ‘শান্তিরক্ষা’ করতে নেমেছে, তখন স্বপ্নেও ভাবা যায়নি যে, জনগণের জন্য তারা ‘সুরক্ষাকারী’ হয়ে যাবে! আজকের দিনটি যেন এক পরাবাস্তব সত্য! বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যাদের কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে থাকে আতঙ্ক আর ক্ষোভ, তাদের নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। হ্যাঁ, সেই ছাত্রলীগ, যারা নিজেদেরকে “ভ্রাতৃপ্রতিম” সংগঠন বলে দাবি করলেও, তাদের আসল পরিচয় হলো ‘দেশদ্রোহী’ আর ‘অন্যায়কারী’। অতএব, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলেও, তাদের ‘পোশাকী’ কর্মকাণ্ডের জন্য তাদেরকে মনে রাখা হবে। হয়তো ছাত্রলীগের

নিষিদ্ধ ঘোষণায় দেশের ছাত্রসমাজ নতুন এক সূর্যের আলো দেখতে পাবে, যেখানে তারা স্বাধীনভাবে আন্দোলন ও প্রতিবাদ করতে পারবে। তবুও, আজকের এই নিষিদ্ধ ঘোষণা যেন পরবর্তী সময়ে ‘সন্তোষজনক’ কিছুর রূপ নেয়, তা আমাদের সকলের কামনা। সুতরাং, ছাত্রলীগ, বিদায়! অন্য মোড়কে ফিরে এসে আবারও এই পিচ্ছিল পথে হাঁটার চেষ্টাও করবে না। জনগণের কাছে তোমাদের অন্যায়গুলোর খেসারত দেওয়ার দিন এসে গেছে। জানিয়ে রাখি, যখন ‘বিক্রি হওয়া’ ছাত্রলীগের মতো আরও কিছু গঠনমূলক সংগঠন তৈরি হবে, তখন দেশের জনতার বিরুদ্ধে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোকে স্মরণ করা হবে কেবল পাগলাটে আড্ডার এক অতীত ইতিহাস হিসেবে। জনগণের নিরাপত্তা এবং স্বার্থে কাজ করার পথে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হোক। তাহলে, ছাত্রলীগ, বাকি জীবন ‘নিষিদ্ধ’ হয়ে চলতে থাকুন। তোমাদের অবসানের জন্য আমরা প্রস্তুত, আর দেশের ছাত্র সমাজে শান্তির অভাব থাকবে না—এখন থেকে আমাদের স্বপ্নের পথে হাঁটার সময় এসেছে!