চট্টগ্রামের ২৯০টি পূজামণ্ডপে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক টিম দিনরাত পাহারা দেবে।-এমনটি জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম।
বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতার লক্ষ্যে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয়। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে কোনো অপশক্তি যাতে ষড়যন্ত্র করতে না পারে; সেজন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সতর্ক থাকতে হবে। পতিত সরকারের দোসররা জনদৃষ্টি ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। কিন্তু এদেরকে কিছুতেই সফল হতে দেওয়া হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করতে সার্বিক সহযোগিতা করবে চট্টগ্রাম নগর বিএনপি। চট্টগ্রামের ২৯০টি পূজামণ্ডপে বিএনপির সমন্বয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে দিনরাত পাহারার ব্যবস্থা করা হবে।’
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনুর রশীদ ও ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
এ সময় মাহবুবের রহমান শামীম চট্টগ্রামের সর্বস্তরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘ধর্মীয় পরিচয়ে বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, সবাই বাংলাদেশি। দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকটা নাগরিকের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্র ও সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।’
বিশেষ অতিথি ভিপি হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আগের চেয়ে এবার আরো বেশি উৎসবমুখর পরিবেশে সনাতনীদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব পালিত হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন প্রতিটি মণ্ডপে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে টিম করে সনাতনীদের পাশে থাকে।’
ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, ‘ফ্যাস্টিট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে দেশকে নিয়ে তারা নানা ষড়যন্ত্র করে চলেছে। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষেও ওই অপশক্তি নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তাই এবারও বিএনপিসহ ছাত্র-জনতা তাদের সেই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবে।’
সভাপতির বক্তব্যে এরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা শান্তিপ্রিয় চট্টগ্রামে বারবার ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু চট্টগ্রামের সচেতন জনতা ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও দিবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিএনপির নেতাকর্মীরা যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা সমন্বয় করে সনাতনী ভাইদের পাশে থাকবে।’
নাজিমুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে বিভাজনের রাজনীতি। তারা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু বিভাজনের মাধ্যমে সব সময় দেশে অস্থিতিশীল করে রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু হিন্দুদের সবচেয়ে ক্ষতি আওয়ামী লীগই করেছে।’
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপি নেতা এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস কে খোদা তোতন, হারুন জামান, এস এম আবুল ফয়েজ, এস এম সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, শাহ আলম, ইস্কান্দার মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, মন্জুর আলম মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সদস্য সাংবাদিক বিপ্লব পার্থ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব ধর তমাল, থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, মো. আজম, হাজী মো. সালাউদ্দীন, হাজী হানিফ সওদাগর, আবদুস সাত্তার সেলিম, এম আই চৌধুরী মামুন।
এছাড়াও, থানা সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জাহিদুল হাসান, বাদশা মিয়া, মাঈনুদ্দীন চৌধুরী মাঈনু, কাওসার হোসেন বাবু, মহানগর তাঁতীদলের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, কৃষক দলের সদস্য সচিব সাবের আহমেদ টারজান, নগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব এড. আবদুল আজিজ, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শহীদ উল্লাহ চিশতী, সদস্য সচিব হাফেজ জয়নাল আবেদীনসহ ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।