খাগড়াছড়িতে জননিরাপত্তায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩ টা থেকে জারি করা ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন খাগড়াছড়ির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান।
এর আগে, গেল মঙ্গলবার এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যা করে পাহাড়ী শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় পাহাড়ি বাঙালি দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতা এড়াতে জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে খাগড়াছড়িতে ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও সহিংসতার ঘটনায় জনমনে বিরাজ করছে আতঙ্ক। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জনের বেশী আহতের পাশাপাশি লুটপাট ও ভাংচুর হয়েছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। ২টি মামলা হলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। প্রশাসন থেকে গঠন করা হয়েছে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়া পাড়া সড়কের চিরচেনা দৃশ্য অচেনা দেখে শংকা জাগছে স্থানীয়দের। যেখানে সহিংসতার আগুন ও আঘাতে পিচ ঢালা সড়কে মিশে গেছে অনেকের স্বপ্ন। গতকাল (বুধবার) বিকেলে স্থানীয় টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক সোহেল রানাকে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে পিটিয়ে হত্যার খবরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পাহাড়ী বাঙালী দুইটি পক্ষের।
মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার দিকে চেঙ্গী স্কয়ার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ সন্ধ্যায় শেষ হয় পানখাইয়াপাড়া সড়কে এসে। এ সময় মহাজনপাড়া, নারিকেল বাগান ও পানখাইয়াপাড়া সড়কের অনেক দোকান লুটপাট, ভাংচুর করার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। সংঘর্ষ চলাকালে মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি অনেক গাড়ি ভাঙ্গা হয়। ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে একটি প্রাইভেট চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র। প্রাথমিক ভাবে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা বলে দাবী ব্যবসায়ীদের।
সহিংসতার ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছে প্রশাসন।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। আশা করছি শিগগিরই এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সবসময় টহলে রয়েছে।
সর্বশেষ ধর্ষণ অভিযোগ, সরকারি কাজে বাধা ও হামলায় ঘটনায় ২টি মামলা হলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। নিহত শিক্ষক সোহেল রানার পরিবার থেকে আলাদা মামলা হবে বলেও জানা গেছে।