চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে। এই হামলায় বিএনপির ৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি ছাত্রদলের। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে শিবিরের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুই দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
দুই দফা হামলায় আহতরা হলেন- চট্টগ্রাম কলেজের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল করীম আরিয়ান, শরীফুল ইসলাম আবির, আজিজুল হক নাঈম ভূইয়া, শুয়াইবুল ইসলাম এবং আশরাফুল ইসলাম। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে আশরাফ হোসেন নামের এক ছাত্রদল কর্মীকে অধ্যক্ষের ভবনের সামনে থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে কয়েকজন। ওই সময় কয়েকজন মেয়ে সহপাঠীসহ সেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন আশরাফ। কেন ক্যাম্পাসের ভেতর মেয়েদের সঙ্গে কথা বলছেন এই প্রশ্ন করেই তাকে মারধর শুরু করে হামলাকারীরা। পরে এই বিষয়ে অধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে দ্বিতীয় দফা হামলার শিকার হয় ছাত্রদলের নেতারা। এতে তাদের চারজন আহত হয়।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল করিম বলেন, ‘নারী সহপাঠীদের সঙ্গে পরবর্তী ক্লাসে যাওয়ার অপেক্ষা করছিল আশরাফ। মেয়েদের সঙ্গে কথা বলার অজুহাতে তাকে মারধর করা হলেও মূল কারণ ছিল সে ছাত্রদল কর্মী। তাকে সেখান থেকে তুলে টর্চারসেলে নিয়ে মারধর করা হয়। মারধরের পর হামলাকারীরা আশরাফকে সিএনজিতে তুলে কলেজ থেকে পাঠিয়ে দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আশরাফ অধ্যক্ষকে টেলিফোনে বিষয়টি জানালে তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে ফেরার পথে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে জামায়াত শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র ও রামদা হাতে আমাদের ওপর চারপাশ থেকে অতর্কিত হামলা করে। তারা আমাদের লক্ষ্য করে ২টি ককটেল বিস্ফোরণ করে। দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে এসব হামলায় মতিউর রহমান নামে একজনের জড়িত থাকারও অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অধ্যক্ষের রুমে অভিযোগ দিতে গেলে দল বেঁধে তারাও সেখানে যান। ছাত্রদল বলছে মতিউর রহমান শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তবে শিবিরের সঙ্গে কোন সংশ্লিষ্টতা নেই দাবি করে মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছাত্রদল অধ্যক্ষকে অভিযোগ দিয়ে বের হওয়ার পর আমরা অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়েছিলাম।’
কার পক্ষ থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়েছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মতিউর রহমান বলেন ‘আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক। যাকে মারধর করা হয়েছে বলা হচ্ছে তার অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে আমি অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্বিতীয় দফায় তাদের ওপর যে হামলা হয় তাখন আমি অধ্যক্ষের কক্ষে। আমি কিভাবে হামলায় জড়িত থাকব। আগেরটার বিষয়েও আমি কিছু জানিনা। আশরাফের অভিযোগপত্র পড়ে জেনেছি।’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখা শিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকাতে। শুনেছি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দলবেধে প্রিন্সিপালকে হুমকি দিতে গিয়েছিল। পরে কলেজ থেকে বের হওয়ার পর গেটের বাইরে তাদের সঙ্গে দেবপাহাড় কেন্দ্রিক কারও ঝামেলা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর) ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিবৃতি
ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের যৌথ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর) ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাদের। সংগঠনটির বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।