রাজধানীর সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুপক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। রোববার (২৫ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে সচিবালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে সেনাবাহিনীর দুই সদস্যও রয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো রাস্তায় নামা আনসার সদস্যরা আজ সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন। আনসার সদস্যদের আন্দোলনের কারণে টানা সাড়ে ৮ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ হয়ে ছিলেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সচিবালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহসহ আরও অনেকে।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম নিজেদের ফেসবুক আইডিতে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে সচিবালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ করলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জমা হতে থাকে। পরে রাত ৯টায় আনসার সদস্যদের প্রতিহত করতে তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় যায়। এসময় কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে আনসার সদস্যরা। পরে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আনসার সদস্যরাও পিছু হটে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর্যন্ত সচিবালয় এলাকায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ জনতাও লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে পড়ে। ছাত্র-জনতার ধাওয়া খেয়ে সচিবালয় এলাকা ছেড়ে যায় আনসার সদস্যরা। এসময় লাঠি দিয়ে বেশ কিছু আনসার সদস্যদের পিটায় ছাত্র-জনতা। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং পুলিশও কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
এসময় শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ কিছু আনসার সদস্যকে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়। তখন আনসার সদস্যদের উদ্দেশ করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। আহতদের প্রায় সবারই মাথায় আঘাত রয়েছে। আহতদের মধ্যে আনসার, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক রয়েছেন। রয়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্যও।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, এ পর্যন্ত ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী ও আনসার আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাদের বেশির ভাগেরই মাথায় আঘাত। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে তাদের।