ভারী বৃষ্টিতে আবারও ডুবেছে চট্টগ্রাম নগর। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। যানবাহন কম থাকায় বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবীরা।
এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত আরও অন্তত ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া পাহাড়ধসের সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাত হলেও এখনো পর্যন্ত নগরের পাহাড়গুলোতে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর পতেঙ্গার সহকারী আবহাওয়াবিদ আলী আকবর খান জানান, বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দ্বিতীয় দফা ডুবেছে নগরের বিভিন্ন এলাকা। নগরের শুলকবহর, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, মোহাম্মদপুর, জাকির হোসেন রোড, ওয়াসা রেবতী মোহন সড়ক, প্রবর্তক মোড় কাতালগঞ্জ, ডিসি রোড, ফুলতলা, কে বি আমান আলী রোড, চকবাজার, বাকলিয়া, দেওয়ানহাট, মোগলটুলী, পাঠানটুলী, আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ রোড, হালিশহরের ওয়াপদাসহ বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর পানি জমে গেছে। মঙ্গলবারও কোমর পানিতে ডুবেছিল চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকা।
নগরের মোহাম্মদপুর এলাকায় কোমর পানি জমে আছে। দোকান ও বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ায় এখানকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ারের পানি যুক্ত হয়ে পানি আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। চকবাজার চক সুপার মার্কেট এলাকায়ও একই অবস্থা
খুলশী বিজিএমইএ রেলওয়ে কলোনি এলাকায়ও বাসা বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।
পশ্চিম বাকলিয়ার বাসিন্দা সাকলাইন মাহমুদ জানান, তাদের এলাকার অলিগলিতে হাঁটু পানি জমে গেছে। বাসা-বাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকে পড়েছে।
চকবাজারের ফুলতলা থেকে বাকলিয়ার সৈয়দ শাহ রোড পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে ছুটছেন পথচারীরা। একই অবস্থা কাতালগঞ্জ এলাকায়ও। এখানেও কোমর পানিতে তলিয়ে আছে পুরো এলাকা।
বন্দর নগরী চট্টগ্রামের কয়েক দশকের পুরনো জলাবদ্ধতা নিরসনে চারটি প্রকল্পের কাজ চলছে। এগুলো মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি হল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ এর ৩৬টি খাল ঘিরে নেওয়া প্রকল্প। শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। গত বছরের নভেম্বরে সংশোধনের পর প্রকল্প ব্যয় আরও ৩ হাজার ১০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়। প্রকল্পটির পূর্ত কাজ করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।