ঢাকাসোমবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তাকে যদি বলা হয় তার শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করতে তিনি কি তা করতে পারেন?

ফাহিম শাহারিয়ার | চবি প্রতিনিধি
আগস্ট ১৯, ২০২৪ ৯:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজ সোমবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ক্যাম্পাস সচল ও নতুন প্রশাসন নিয়োগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফির সাথে এক সাক্ষাৎকারে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি ও ক্যাম্পাস সচল হওয়ার বিষয়ে তার বক্তব্য সিটিজি পোস্টকে জানান।

আপনার পরিচয়, ও প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে আপনার অবদান।

– আমি খান তালাত মাহমুদ রাফি, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক এবং কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক। আপনারা দেখতে পারছেন আমরা একটা বিপ্লবের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে পেরেছি এবং ফ্যাসিস্ট সরকারকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করেছি। সব বিপ্লবের একটি উদ্দেশ্য থাকে দেশকে পুনর্গঠন করা, দেশকে সংস্কার করা, আমরাও সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি আমরা যে সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

ক্যাম্পাসে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আপনার মতামত কি?

– ক্যাম্পাসে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বললে আমরা আজকেও যারা ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আছি এবং বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সিআর’রা বসেছিলাম আমাদের পরর্বতী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে। গত দুইদিন আগে আমাদের সরকারের একজন উপদেষ্টা ফারুকী আজম স্যার চট্টগ্রামে এসেছিলেন এবং তার কাছে আমরা আমাদের চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিষয়টি উপস্থাপন করি এবং আমাদের প্রথম এবং প্রধান দাবি ছিল অতি দ্রুত প্রশাসনকে নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাস সচল করা। এ বিষয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়ার চেষ্টা করছি, যেহেতু এখন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম তাই আমরা অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সিআর’দেরকে একটি গুগল ফর্ম দিব যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় মতামত দাবি গুলো জানিয়ে আমাদেরকে উপস্থাপন করবে।

প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু না করে ভিসি সহ প্রশাসনের পদত্যাগ নিয়ে আপনার মতামত ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানাবেন।

– আমরা একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী ছিলাম না। আমাকে প্রক্টর অফিসে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, শহীদ মিনারের শিক্ষার্থীদের উপরে হামলা করা হয়েছিল, ছাত্রীরা যারা হলে ছিল তাদেরকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এসব কিছুই হয়েছে এই প্রশাসনের অধীনে। তাই আমরা তাদেরকে কোন প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দিতে চাইনি। মূলত আমরা কোন ফ্যাসিস্ট প্রশাসনকে প্রশাসনিক কার্যক্রমে চাইনি। ১ আগস্ট যখন পুরো দেশ একটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল, আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হচ্ছিল, তখন আমাদের ভিসি বিটিভি তে শোক দিবস সম্পর্কে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তাই আমরা এরকম প্রশাসনকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার দিতে আগ্রহী হয়নি।

আপনাকে মাথায় রাখতে হবে তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা, তিনি সরকারের নির্দেশ পালন করছিলেন। এ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আপনি এটা কিভাবে দেখছেন?

– প্রেসার আমারো ছিল, আমার মৃত্যুঝুঁকি ছিল, মৃত্যুঝুঁকি থেকে বড় কিছু তো আর হতে পারে না। তাকে যদি বলা হয় তার শিক্ষার্থীদের উপরে হামলা করতে, তিনি কি তা করতে পারেন? তার কি সেই অধিকার আছে?

এখন এখন বিশ্ববিদ্যালয় একটা প্রশাসন হীনতায় ভুগছে। নতুন প্রশাসন নিয়োগ এ ব্যাপারে আপনাদের পদক্ষেপ কি?

– আমরা প্রশাসনের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলছি এবং প্রশাসন যাকেই দায়িত্ব দিব আমরা সেটাই মেনে নিব। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস চট্টগ্রামের সন্তান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন, তাই আমরা আশাবাদী তিনি আমাদের জন্য একটি ভালো প্রশাসন কে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করবেন। পরবর্তী যদি এই প্রশাসন অনিয়ম করে তবে আমরা সেটার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিব।

আপনাদের নির্দিষ্ট কোন পছন্দ আছে নাকি আপনারা সরকারের সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দিবেন?

– আজকে আমরা সকলের সাথেই কথা বলেছি সকলেই এক সিদ্ধান্ত পৌঁছেছি যে আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দিব।

ক্যাম্পাস কত দিনের মধ্যে সচল হতে পারে সম্পর্কে আপনাদের কোন ধারনা আছে কি? 

– আমরা চেষ্টা করছি শীঘ্রই ক্যাম্পাস সচল করতে কিন্তু আমরা কোন সঠিক সময়সীমা বলতে পারছি না তবে খুব শীঘ্রই ক্যাম্পাস চালু হবে।

আপনাকে ধন্যবাদ।