এবারের কোরবানির ঈদে চট্টগ্রামে সাড়ে তিন লাখ কাঁচা চামড়া কেনার প্রস্তুতি নিয়েছেন কাঁচা চামড়া আড়তদাররা। এরইমধ্যে চামড়া সংরক্ষণের সব ধরনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছেন তারা।
ঈদ সামনে রেখে আগেই কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ঢাকায় গরুর চামড়ার দাম গতবারের চেয়ে পাঁচ টাকা এবং ঢাকার বাইরে তিন টাকা বেড়েছে। চামড়া ব্যবসায়ীদের এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া কিনতে হবে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়; গত বছর এই দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা গতবছর ছিল ৪৭ থেকে ৫২ টাকা।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মুসলিম বলেন, গত ঈদে আমরা প্রায় তিন লাখ ৪৫ হাজার কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছিলাম। এর মধ্যে আড়াই লাখের বেশি ছিল গরুর চামড়া। এবার গরু, ছাগল ও মহিষ মিলিয়ে সাড়ে তিন লাখ চামড়া সংগ্রহের টার্গেট রয়েছে।
তিনি বলেন, এ বছর গরমের তীব্রতা বেশি, যেটি চামড়া সংগ্রহের জন্য অনূকূলে নয়। চামড়া রেখে দিলে খুব তাড়াতাড়ি সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। তাই মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছে অনুরোধ থাকবে- চামড়া সংগ্রহ করার পর যাতে দ্রুত আড়তে নিয়ে আসেন অথবা লবণ দিয়ে স্থানীয়ভাবে মজুদ করে রাখেন।
মৌসুমী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামটি হলো সংরক্ষণের পরের দাম, যা অনেক কোরবানিদাতা কিংবা মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বোঝেন না। তারা মনে করেন- সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আড়তদাররা চামড়া কিনবেন মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। তাই বেশি দামে চামড়া না কিনতে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে।
গত ১২ জুন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ঈদুল আযহা উপলক্ষে জাতীয় সম্পদ কাঁচা চামড়া সংরক্ষণসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কাঁচা চামড়া সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, ব্যবসায়ীদের অনেক সমস্যা আছে, সেগুলো আমরা আস্তে আস্তে সমাধান করবো। আপনারা যদি চামড়া এক সপ্তাহ সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন তাহলে যথাযথ মূল্য পাবেন। রাতারাতি ঢাকায় পাঠিয়ে দিলে যথাযথ মূল্য পাবেন না। লবণ নিয়ে কোনো টেনশন নেই। কম দামে লবন পাবেন আপনারা।
তিনি আরো বলেন, আমাদের জাতীয় সম্পদ চামড়া। এ সম্পদ যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। জেলা ও মহানগরে চামড়া সংরক্ষণের জন্য ইমাম সমিতি, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে চামড়া সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সভা করছেন। চামড়া অবশ্যই শেডের মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে। প্রত্যেক উপজেলায় দুই থেকে তিনটি জায়গায় চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে। সে বিষয়ে আপনাদের গুরুত্ব দিতে হবে। খোলা জায়গায় কোনোভাবে চামড়া সংরক্ষণ করা যাবে না। অবশ্যই শেডওয়ালা স্থানে চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে।