কালো টাকা হিসেবে অপ্রদর্শিত আয় সাদা বা বৈধ করার সুযোগ দেওয়াকে বড়শিতে আধার গেঁথে মাছ শিকারের সাথে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রীর যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে ধুম্রজ্বাল সৃষ্টির কৌশল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘বাঙালি জাগরণে করণীয় ও সিরাজুল আলম খান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে রাঘববোয়ালদের লুটেপুটে খাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বড়শিতে আধার গেঁথে মাছ শিকার হাস্যকর কথা। এই বাজেটে রাঘববোয়ালদের খাবারের আরেক ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক বছর একই ঘটনা ঘটে। যারা অর্থনৈতিক বিশ্লেষক তারা বলছেন, এটা শুধুমাত্র ক্ষতি ছাড়া আর কিছু করবে না। কারণ বড় সংকট হচ্ছে সাধারণ মানুষের জন্যে ইনফ্লুয়েশন… দ্রব্যমূল্য এত বেশি বেড়ে গেছে যে, এটা সাধারণ মানুষের কাছে সহনীয় হচ্ছে না। আজকে এই সমস্যা কথাগুলো বলে একটা ধুম্রজাল সৃষ্টি করে মানুষকে কতদিন প্রতারিত করে রাখা হবে।
বাংলাদেশেন স্বাধীনতাকে বিকৃতি করা হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি দল একজন ব্যক্তির অবদানের ছাড়া আর কারও কোনো অবদান স্বীকার কারতে চায় না। এর জন্য তারা বাংলাদেশ স্বাধীনতার পেছনে যারা কাজ করছেন, তাদের সবাইকে অবলীলায় অস্বীকার করে। শুধু অস্বীকার করে না, তাদেরকে তারা ছোট করে কথা বলে। একই কারণে তারা জিয়াউর রহমানকেও সহ্য করতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একটি ভয়াবহ সংকটের মধ্যে পড়ে গেছে, যেখানে বাংলাদেশের অস্তিত্ব প্রশ্নের সম্মুখীন। এমন একটি শাসকগোষ্ঠী জোর করে ক্ষমতার দখল করে বসে আছে, যারা বাংলাদেশ সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন দূরে থাক, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন থেকে বহু দূরে বাংলাদেশকে ছিটকে ফেলে দিয়েছে। শাসকগোষ্ঠী এখানকার মানুষের কল্যাণ করছে না। তারা মানুষকে শোষণ, নির্যাতন করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছি। আমাদের অধিকার ফিরিয়ে আনা, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা, বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা, কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে এবং এগুলোই আমাদের অর্জন করতে হবে।
সিরাজুল আলম খান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের মুক্তির সংগ্রামের যে চালিকাশক্তি, সেখানে তিনি কাজ করেছেন। আমি ভিন্ন রাজনীতি করেছি, তিনি ভিন্ন রাজনীতি করেছেন কিন্তু তার যে অবদান সেই অবদান কখনো অস্বীকার করা যাবে না। যারা অস্বীকার করতে চায় তারা আসলে বাংলাদেশে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করতে চায়।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, বাংলাদেশ জাসদের নুরুল আম্বিয়া, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।