ঢাকাবুধবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

উপকূলের উন্নয়নে সবকিছু করে দেয়ার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ৩০, ২০২৪ ৪:৩৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তুহারা মানুষের বাড়ি ঘর নির্মাণ, টেকসই বাঁধ, কৃষকদের জন্য সার বীজসহ উপকূলের উন্নয়নে সবকিছু করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ মাঠে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খোঁজখবর ও ত্রাণ বিতরণ করতে আসেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি দুই হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশে কোনো মানুষই বাস্তহারা থাকবেনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দিয়ে প্রতিটি মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই করা হবে।
তিনি বলেন, অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের জন্য সেনানিবাস, নৌ ঘাটি, রাডার, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং নতুন একটি বন্দর করে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় থাকে তখনই দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন হয়। এর আগে অনেক সরকার ছিলো কেউ এই এলাকার জন্য কাজ করেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে গেছে ইতোমধ্যে আমরা খোঁজ নিতে বসেছি। তাছাড়া আমি আবার সবার সঙ্গে বসবো। যেখানে যেখানে যাদের বাড়ি-ঘর ভেঙেছে, তাদের ঘর-বাড়ি করে দেবো, এইটুকু ভরসা আপনারা রাখবেন।
তিনি বলেন, জলোচ্ছ্বাসের কারণে অনেক পুকুরের পানি নোনতা হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় মাছের ঘের ভেসে গেছে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে, ধান কাটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তারপরও তরিতরকারি যা নষ্ট হয়েছে, কৃষক যাতে আবার সেগুলো বপণ করতে পারে, সে জন্য বীজ, সার, যা যা লাগে সেগুলোর ব্যবস্থা ইনশা আল্লাহ আমি করে দেবো। নতুন উদ্যমে আপনারা যাতে চাষ করতে পারেন, আমি চাই আমাদের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী থাকবে না। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা পদক্ষেপ নেই। আর সেই ব্যবস্থা আমরা করে দেবো।
এবারের ঝড়-জলোচ্ছ্বাস খুবই অস্বাভাবিক হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সাইক্লোন শেল্টার করেছি, সেখানে মানুষ আশ্রয় পেয়েছে। যারা গৃহহীন, তাদের দুর্যোগ সহনীয় ঘর করে দিয়েছি। যে কারণে মানুষ অন্তত আশ্রয়ের জায়গা পেয়েছে। পশুপাখি আশ্রয়ের ব্যবস্থা পেয়েছে।

তিনি বলেন, আজ ধারাবাহিক ভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই দুযোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নতি হয়। দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি আপনারা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন। রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ করে দিয়ে আপনাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা… বিদ্যুতের ব্যবস্থা সব করে দিয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের জীবনের যে চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা তার ব্যবস্থা করার জন্য যা যা দরকার আওয়ামী লীগ সরকার তা করে যাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি, সেখান থেকে বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ আর বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। মায়ের নামে আমরা বৃত্তির টাকা পাঠাই। যারা একেবারে হতদরিদ্র বিনা পয়সায় খাদ্য সাহায্য দিই। এখন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, যারা কিনতে পারে না তাদের জন্য পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। অল্প টাকায় চাল, ডাল, তেল কিনে নিতে পারবে সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিয়েছি। দেশের মানুষ যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। পাশাপাশি মানুষের সার্বিক উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
রাস্তাঘাটের উন্নয়নের জন্য সব জায়গায় খুব সহজেই যাওয়া যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে এই পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পাঁচ-ছয় ঘন্টার মধ্যে পৌঁছানো যায়। আগে কিন্তু আসা যেতো না। পাশাপাশি গ্রামেগঞ্জে রাস্তাঘাট করে দিয়েছি। এই দক্ষিণাঞ্চল সবচেয়ে অবহেলিত ছিল।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড উপকূলীয় এলাকা হেলিকপ্টারে পরিদর্শন করেন।
ত্রাণ বিতরণ শেষে আন্ধারমানিক নদীর উপর নির্মিত শেখ কামাল সেতু পরিদর্শন শেষে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যান। সেখানে বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে বিকেল ৪টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন তিনি।