চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দুইটি বাস পোড়ানোর প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রত্যাহার করে নিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। রোববার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানায় সংগঠনটি। এর আগে সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় ধর্মঘট। সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা চার দফা দাবি জেলা প্রশাসক কর্তৃক বাস্তবায়নের আশ্বাসে ১২ ঘণ্টার মাথায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে গাড়ি চলাচলে নিরাপত্তা প্রদান, গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ, অবৈধ গাড়ির বিষয়ে ব্যবস্থা, শ্রমিকের ওপর অকারণে মামলা না করাসহ চারটি দাবি তোলা হয়। সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে যে তিনটি প্রশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেগুলোর বিষয়ে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সড়ক সংস্কার, নিহত-আহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণসহ সড়কের শৃঙ্খলার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাউজান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাঙ্গুনিয়া, বিআরটিসির সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতিনিধিসহ অনেকে।
এর আগে সকাল থেকেই শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে বৃহত্তর চট্টগ্রামের অধিকাংশ রুটে বন্ধ থাকে গণপরিবহন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। গণপরিবহন না থাকার সুযোগে রিকশা, অটোরিকশাসহ ছোট গাড়ির চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন।
সকালে নগরের নতুন পাড়া, অক্সিজেন, ২ নম্বর গেইট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাটসহ কয়েকটি জায়গা ঘিরে এসব ভোগান্তি চোখে পড়ে। গরমে একদিকে অস্থির অবস্থা। এরমধ্যে আবার পরিবহন ধর্মঘটে নাজেহাল অবস্থা হয়েছে জরুরী প্রয়োজনে বাসার বাইরে বের হওয়া মানুষের। সকালে বহদ্দারহাট নতুনব্রিজ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, আমিরাবাদগামী যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাচ্ছেন না। তবে, গুটিকয়েক মাইক্রোবাস থাকায় তাতে করেই কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে শহর ছাড়ছেন তারা।