ঢাকাবুধবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন স্থগিত

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ১২:২৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। হল ভ্যাকেন্ট ও একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার জন্য আগামীকাল শুক্রবার সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীরা আপাতত আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবেন।

 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যকার বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


এরআগে বৃহস্পতিবার দুপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এবং বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্র ও শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরপর সন্ধ্যায় ছাত্ররা বাসে আগুন দেন।


সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বাস চালকের বিচারসহ সাত দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের সামনে একটি বাসে আগুন দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।


মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনে গাছ ফেলে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।


বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফুয়াদ ইকবাল সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি উত্থাপন করেন।


দাবিগুলো হলো: পলাতক আসামি খুনি ড্রাইভারকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ভুক্তভোগী পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। আহত শিক্ষার্থীর সব চিকিৎসার দায়িত্ব শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কে দ্রুত প্রশস্তকরণ কার্যক্রম শুরু এবং দূরপাল্লার বাস ছাড়া সব লোকাল বাস চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে চুয়েট মেডিকেল সেন্টারের সব প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, এক্সরে, ইসিজি আধুনিক যন্ত্রপাতি নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুপাতে অপ্রতুল হওয়ায় অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের জন্য ৪ টি অ্যাম্বুলেন্স নিশ্চিত করারও দাবি তুলে ধরা হয়।


এ সব দাবি লিখিতভাবে আদায় না হওয়া পর্যন্ত সব প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং আন্দোলন চলবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।


সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের সেলিমা কাদের কলেজ গেট এলাকায় বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন নামে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহত হন।


এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। নিরাপদ সড়ক, ঘাতক চালককে গ্রেফতারসহ বিভিন্ন দাবিতে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে মঙ্গলবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের সামনে কাপ্তাই সড়কে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় গাছের গুঁড়ি, আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করতে থাকেন তারা।


শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কথা বলতে এলে কোনো ধরনের আশ্বাস দিতে না পারায় ভুয়া, ভুয়া বলে স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করেও একই স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।


সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তৌফিকের জন্য গায়েবানা জানাজা চুয়েটের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ উপাচার্য অংশ নেন। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।