পার্বত্য চট্টগ্রামের নতুন আতঙ্ক কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। সশস্ত্র সংগঠনটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে বারবার সামনে আসছে সংগঠনটির প্রধান নাথান লনচেও বমের নাম। যিনি নাথান বম নামেও পরিচিত।
তাকে নিয়ে আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনায় আসছে দরিদ্র ঘরে বড় হওয়া নাথান বমের সহায় সম্পদের প্রসঙ্গও। প্রশ্ন আসছে নাথান বমের কত সম্পদ?
২০২৩ সালের ২৪ জুলাই পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার আল ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার যোগাযোগের নতুন তথ্য সামনে আনে র্যাব। জামায়াতুল আনসারের কথিত আমির মো. আনিসুর রহমান মাহমুদকে গ্রেপ্তারের পর নাথান বমের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগের কথা জানায় বিশেষায়িত এই বাহিনী। জঙ্গি সংগঠনটির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয় সামনে আসার পর তার সম্পদ কতটা বেড়েছে তা জানা যায়নি। তবে বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তার সম্পদের একটা ধারণা পাওয়া যায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য স্থানীয় নির্বাচনি দপ্তরে জমা দেওয়া তার হলফনামা থেকে সম্পদের এই ধারণা পাওয়া যায়।
হলফনামায় নাথান লনচেও বমের পেশার বিবরণে লেখা আছে, ‘চিত্রশিল্পী ও লেখক হিসেবে আমার অঙ্কিত শিল্পকর্ম ও প্রকাশিত গ্রন্থাদি বিক্রয় এবং শিল্পসৃষ্টি’।
তার এবং তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয়ের উৎসে ‘বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকান বা অন্যান্য ভাড়া’ থেকে আয় লেখা আছে যথাক্রমে দেড় লাখ ও ৫০ হাজার টাকা। পেশা থেকে আয় যথাক্রমে ছয় লাখ ও এক লাখ টাকা। এক্ষেত্রে কৃষিখাত, ব্যবসা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানত, চাকরি ও অন্যান্য বিষয় উল্লেখ করার জন্য নির্ধারিত ঘরগুলো ফাঁকা আছে।
বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর স্থানীয় নির্বাচনি দপ্তরে এই হলফনামা দাখিল করেন নাথান বম।
এতে তিনি এবং তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের হিসেবে নিজ নামে তিন লাখ টাকা উল্লেখ করা আছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ তার নিজ নামে দুই লাখ এবং স্ত্রীর নামে চার লাখ টাকা উল্লেখ করেছেন। ‘স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলংকারাদি’ নিজ নামে পাঁচ লাখ এবং স্ত্রীর নামে দুই লাখ টাকা উল্লেখ করেছেন। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র তার নিজ নামে উল্লেখ করেছেন যথাক্রমে এক লাখ ও দুই লাখ টাকা। এ ছাড়া অস্থাবর সম্পদের কলামে ‘বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির শেয়ার’, ‘পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগের পরিমাণ’, ‘বাস, ট্রাক, মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেল ইত্যাদির বিবরণী’ ও অন্যান্যের ঘর ফাঁকা রাখা হয়েছে।
আর স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে কৃষিজমি তিন লাখ টাকা, অকৃষি জমি চার লাখ টাকা, দালান সাত লাখ টাকা, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট তিন লাখ টাকা অর্জনকালীন সময়ের আর্থিক মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া চা বাগান, রাবার বাগান, মৎস্য খামার ইত্যাদির ঘর ফাঁকা রাখেন। একই সঙ্গে ‘স্ত্রী / পিতার নামে’, ‘নির্ভরশীলের নামে’, ‘যৌথ মালিকানার ঘরগুলোতেও কোনো কিছু লেখা নেই।
হলফনামায় দায়-দেনার ঘরেও কিছু লিখেননি তিনি। এতে আরও লেখা আছে, ‘আমি একক বা যৌথ ভাবে বা আমার ওপর নির্ভরশীল কোনো সদস্য অথবা কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা ডিরেক্টর হওয়ার সুবাদে ওই সব ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে কোনো ঋণ গ্রহণ করি নাই।’