বান্দরবানের আলীকদম থানার ডিম পাহাড়ের ২৬ মাইল এলাকায় পুলিশ ও সেনাদের যৌথ তল্লাশিচৌকিতে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
রাত ২টায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত থানচি উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে চাপা আতঙ্ক। চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে থানচিবাসীর।
আলীকদম থানার ওসি তৌবিদুর রহমান রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, সন্ত্রাসীরা গাড়িতে করে এসে তল্লাশিচৌকি ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে তারা গুলি চালায়। এ সময় তল্লাশিচৌকিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলিবর্ষণ করেন। পরে হামলাকারীরা সেখান থেকে পিছু হটে। এ ঘটনায় পুলিশের কেউ হতাহত হয়নি।
এর আগে থানচিতে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশ-বিজিবির ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলি হয়। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টা থেকে গোলাগুলি শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৯টায় থামে।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা গণমাধ্যমকে জানান, থানচি পাহাড়ের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের পাহাড় থেকে থানা লক্ষ্য করে গুলি চালায় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। এ সময় পুলিশও গুলি করে। পরে বিজিবি ও সেনাবাহিনী যোগ দেয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। তবে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ সতর্ক অবস্থায় আছি।
থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দীন বলেন, প্রায় এক ঘণ্টা গোলাগুলি হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে, সন্ত্রাসীরা থানার আশপাশে রয়েছে। এজন্য আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। সকাল হলে বলা যাবে কেউ হতাহত হয়েছে কিনা।
তার আগে, এদিন সন্ধ্যায় বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করেছে র্যাব।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুই দিনের অভিযানের পর রুমা বাজারের পাশের এলাকা থেকে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে তারাবির নামাজ চলাকালে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র গ্রুপ বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ঢুকে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুট করে। এ সময় তারা ব্যাংকের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্রও লুট করে। একই সঙ্গে মসজিদ থেকে ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরদিন বুধবার দুপুরে থানচিতে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তারা বাইরে বের হচ্ছেন না।
দুই বছর আগে পাহাড়ে আত্মপ্রকাশ করা সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট)।