জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, সরকারি হিসাবেই দেশের প্রায় ২৬ ভাগ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই বিশাল অংশ ধার করে খাবার কিনছে। খাদ্যদ্রব্য তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। ১ থেকে দেড় কোটি পরিবার বা ৪ কোটি মানুষ এমন বাস্তবতা মোকাবিলা করছেন। যারা পরিবারভুক্ত নন তারা এই হিসাবের বাইরে। তারা খাবার কিনতে বছরে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করছেন। ঋণ না করলে তারা খাবার পাচ্ছেন না। অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, পণ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না, দুর্ভিক্ষ হয় ক্রয় ক্ষমতার অভাবে। সরকারই স্বীকার করছে প্রায় ৪ কোটি মানুষের খাদ্য ক্রয় ক্ষমতা নেই। দেশ এখন আংশিকভাবে দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত।
দেশে আংশিকভাবে দুর্ভিক্ষ চলছে।
বুধবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা ধার পরিশোধ করতে পারে, তাদেরই মানুষ ধার দেয়। প্রায় চার কোটি মানুষ খাদ্য কিনতে ধার করছেন। কিন্তু হতদরিদ্ররা তো কারও কাছে ধার পান না, তারা কী খেয়ে তিনবেলা পার করছেন? যারা কারও কাছে ধার পান না এমন অন্তত আরও ১০ কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন। সরকার বলে বেড়ায়, দেশে নাকি রুগ্ণ মানুষ দেখা যায় না। এটা কী সত্য কথা? আমাদের বেশিরভাগ মানুষ অর্থ কষ্টে আছেন। সরকার যদি না বোঝে দেশের মানুষ কষ্টে আছে তাহলে সমাধান হবে কিভাবে? মানুষ যখন মোটেও খাদ্য কিনতে পারবে না, না খেয়ে মারা যাবে- সে অবস্থা এখনো আসেনি। তবে, সেদিকেই তো দেশ যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, কোনো দল তাদের নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে টিকতে না পারলে সামনের দিকে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। অস্বাভাবিক রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই স্বাভাবিক রাজনীতি চলতে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। বিরোধী দলকে কাজ করতে দেওয়া সরকারেরই দায়িত্ব। তিনি বলেন, আমরা পল্লীবন্ধুর নির্দেশিত পথে চলে নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি।
জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজুর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত প্রমুখ।