চিনির তরল বর্জ্য নদীতে না ফেলার জন্য এস আলম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন ইছানগরে ভয়াবহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এস আলম সুগার রিফাইন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজে তিন দিন পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। তদন্ত কমিটিতে যারা আছেন তাদের বাইরেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট হিসেবে রসায়ন বিভাগের শিক্ষককে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনা কীভাবে সংঘটিত হয়েছে তা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়া সাপেক্ষে বলা যাবে।’
পোড়া চিনির তরল বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে পড়ে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মরে ভেসে উঠছে। সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘চিনি মিশ্রিত লাভাগুলো এখনও গড়িয়ে আস্তে আস্তে কর্ণফুলী নদী ও অন্যদিকে যাচ্ছে। এটি এখনই বন্ধ করার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। কারখানার পাশেই তাদের জায়গায় কয়েকটি বড় বড় গর্ত করে চিনির তরল বর্জ্যগুলো জমা করে রাখলে সেগুলো আর নদী বা অন্যদিকে যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, এখানে থাকা চিনির উপরের স্তরের ১০-২০ শতাংশ নষ্ট হতে পারে, কিন্তু নিচের চিনি ভালো আছে। এটি রিকভার করার জন্য পরিবেশ, বিএসটিআই, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর ছাড়পত্র লাগবে। কারণ ওইসব দফতরের নিজস্ব তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বা হচ্ছে। এ বিষয়ে জড়িত প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে আমরা চিঠি দিচ্ছি, যাতে আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে তারা তদন্তের কাজটি যেন শুরু বা শেষ করতে পারে। তদন্ত কাজ সম্পন্ন হলে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের রিকভারির কাজটি শুরু করতে পারবেন। বিএসটিআই বা সায়েন্স ল্যাব যদি ক্লিয়ারেন্স দেয় ব্যবহারযোগ্য হলে চিনি রিকভার করা যাবে কিনা, সেক্ষেত্রে টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ নিতে পারি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরপর সিএমপি কমিশনার, ফায়ার সার্ভিসের ডিজি ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে যে টিম আছে সেটিও কাজ শুরু করেছে। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়া যাবে এবং কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তা আমরা বলতে পারবো।’
এ সময় জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রহমান, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা জান্নাত, পরিবেশ অধিদফতরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার, কর্ণফুলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পীষূষ কুমার চৌধুরীসহ ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা পরিদর্শন পরিদফতর ও কর্ণফুলী থানা পুলিশের একটি টিম জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন।