ঢাকাশুক্রবার, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সরকারের আশ্বাস, হুঁশিয়ারি কিছুতেই দমানো যাচ্ছে না রোজার অস্থির বাজার

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ৮, ২০২৪ ১২:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংযমের বার্তা নিয়ে দিন কয়েক বাদেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। সিয়াম সাধনার মাস। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি দেখলে মনে হয় যেন সব সংযম শুধু ভোক্তা সাধারণের জন্য; সংযমের ধার ধারতে হয় না ব্যবসায়ীদের। প্রতি বছর এ মাসটি এলেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে নিত্যপণ্যের দাম; আর নাভিশ্বাস ওঠে ক্রেতার। একের পর এক অজুহাতে ভোক্তা সাধারণের পকেট কাটে সিন্ডিকেট।

 

এবারও সেই একই পরিস্থিতি দৃশ্যমান। সরকারের আশ্বাস, হুঁশিয়ারি কিছুতেই দমানো যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেট। বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে আরও চড়েছে মাছ-মাংস ও সবজির বাজার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যতই বলুক বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে, বিক্রেতারা বলছেন পণ্যের সংকট।

 

শুক্রবার (৮ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায় বাড়তি দামে ঘাম ছুটছে ক্রেতার। এমনকি সরকার নির্ধারিত দামেও পণ্য বিক্রিতে নারাজ বিক্রেতারা।

 

গত কয়েকদিনে স্বস্তি আসতে শুরু করলেও আবার অস্থির হয়ে উঠেছে সবজির বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে কোনও কোনও সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।

বাজারঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৯০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, আলু ৩৫ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা, শসা ৬০ টাকা ও লতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৪০ টাকা, খিরাই ৫০-৬০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গার ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

 

আর প্রতি পিস লাউ ৪০-৬০ টাকা, আকারভেদে প্রতিপিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গত সপ্তাহে সেঞ্চুরি হাঁকানো করলা ও ঢ্যাড়শ বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১০০-১৪০ টাকা ও ১২০ টাকা কেজিতে।

 

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে করলা ও ঢেঁড়শের সরবরাহ তেমন বাড়েনি। তাই দাম বেশি। আর অন্য শাক-সবজির সরবরাহও কম। তাই বাড়তি দাম রাখতে হচ্ছে তাদের।

 

আর ক্রেতারা বলছেন, রোজা এলেই তাদের জিম্মি করে ফেলে ব্যবসায়ীরা। শাকপাতা থেকে শুরু করে সবকিছু খেতে হয় অস্বাভাবিক বাড়তি দামে।

প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।

 

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানেও সরবঅরাহ সংকটের অযুহাত নিয়ে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫২০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকার ওপরে।

 

রোজার পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন করে দাম না বাড়লেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আর প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০-১২০ টাকা, ডাবলির ডাল ৮৫ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫-১১০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫-১৫০ টাকা, চিকন মুগ ডাল ১৭০-১৮০ টাকা ও খেসারি ডাল ১০৫-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

অন্যান্য পণ্যের মধ্যে বেসন ১৪০-১৬০ টাকা, খোলা আটা ৫৫-৬০ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫-৬৮ টাকা, খোলা ময়দা ৬৫-৭০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি বলতে গেলে পাওয়াই যাচ্ছে না। যেসব বিক্রেতার কাছে পাওয়া যাচ্ছে, তারা বলছেন আগের স্টক।

 

এদিকে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন দামের ভোজ্যতেল। এরপরও নতুন বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি না করে পুরাতন বোতল ক্রেতাকে ধরিয়ে বাড়তি দাম চাইছেন বিক্রেতারা। বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেলেও। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল আজ ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

 

রোজার আগে ঊর্ধ্বমুখী মসলার বাজারও। জিরা বাদে বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম। প্রতি কেজি জিরা ৭৫০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪৬০-৪৭০ টাকা, গোলমরিচ ৯০০ টাকা ও লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই মূহুর্তে।