ঢাকাবৃহস্পতিবার, ২৫শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গলে যাওয়া চিনি যাচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ৫, ২০২৪ ১১:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চট্টগ্রামে এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানার গুদামে পুড়ে গলে যাওয়া চিনি যাচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে। এতে কর্ণফুলী নদীর পানি এবং জীব-বৈচিত্র্যের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ড. ইদ্রিস আলী বলেন, শিল্প কারখানা গড়ে তোলার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত ছিল। তারা ডাম্পিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখেনি। এ কারণে কারখানা থেকে পোড়া বর্জ্য পড়ছে কর্ণফুলী নদীতে। এতে নদীর পানি দূষিত হবে। ক্ষতি হবে মৎস্য সম্পদ এবং জীব-বৈচিত্র্য। এস আলম গ্রুপ হয়তো পুড়ে যাওয়া সম্পদের ক্ষতি এক সময় পোষাতে পারবে। পরিবেশের যে ক্ষতি হচ্ছে তা আর পূরণ হবে না। এ জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সজাগ হতে হবে।

হালদা নদী গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, পুড়ে যাওয়া চিনি নদীতে পড়লে অবশ্যই নদীর ক্ষতি হবে। চিনি হোক আর যা হোক- এগুলো এক্সট্রা কেমিক্যাল। এগুলো পানির কোয়ালিটি নষ্ট করবে। এতে পানিতে অক্সিজেনের শূন্যতা সৃষ্টি হবে। এ কারণে পানিতে থাকা জীব-বৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তাই এসব যাতে নদীতে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে জোয়ার-ভাটার কারণে এই সমস্যা এক সময় পূরণ হবে। তাও সময় সাপেক্ষ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদফতর মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাসকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানার এসব লাভা যে কর্ণফুলী নদীতে যাচ্ছে তা আমার জানা ছিল না। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে এস আলম গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার (অ্যাডমিন) আকতার হাসান বলেন, আগুনে পোড়া চিনি কর্ণফুলীতে যাচ্ছে না। এসব নিজস্ব জমিতে ডাম্পিং করা হচ্ছে। আর নদীতে গেলেও তা নদী কিংবা জীব-বৈচিত্র্যের কোনও ক্ষতি হবে না। কেননা এখানে কোনও ক্ষতিকর রাসায়নিক নেই।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (প্রশাসন অর্থ) জসিম উদ্দিন বলেন, যেখানে আগুন লেগেছে সেটিতে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত চিনি মজুত ছিল। এগুলো এক ধরনের দাহ্য পদার্থ। পানি দিয়েও এ আগুন নেভানো যাচ্ছে না। এ কারণে আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। তবে আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে আমরা তা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কবে নাগাদ আগুন নেভানো যাবে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ৯ ইউনিট আগুন নির্বাপণে কাজ করছে। গুদামটির চারপাশ থেকে পানি দেওয়া হচ্ছে। গুদামটির টিন খুলে ফেলা হচ্ছে।

এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো. হোসেন  বলেন, সোমবার ১ নম্বর গুদামে আগুন লাগে। গুদামটিতে এক লাখ মেট্রিক টনের বেশি অপরিশোধিত চিনি ছিল। যার সবটুকুই পুড়ে গেছে। যার বাজার মূল্য এক হাজার কোটি টাকার বেশি। এখনও আগুন জ্বলছে।

জানা গেছে, সোমবার (৪ মার্চ) বিকাল ৩টা ৫৩ মিনিটে নগরীর কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্যারটেক ইছাপুর এলাকায় অবস্থিত চিনি কারখানায় আগুন লাগে। এখন পর্যন্ত আগুন জ্বলছে।