অভিভাবকরা যাতে সহজে বুঝতে পারেন, সে জন্য মূল্যায়ন পদ্ধতি সহজ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, ‘নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তানদের দক্ষতার জায়গাটা অভিভাবকরা যাতে বুঝতে পারেন, সে জন্য বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন।’
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আগের মূল্যায়নে জিপি-৫ পেলেও কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীর যোগ্যতার মূল্যায়ন কতটা হচ্ছে, তা জানার জন্য এক বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আগের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষম হচ্ছে না। কর্মক্ষম জীবনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে না, উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে না। সে কারণে নতুন কারিকুলামে ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি এবং কিছু পরীক্ষা পদ্ধতি রাখা হয়েছে।’
মহিবুল হাসান বলেন, ‘নতুন পদ্ধতিতে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে মূল্যায়ন কার্যক্রম জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়েছে। নৈপুণ্য অ্যাপসের মাধ্যমে আমরা বছরের শুরু থেকেই মূল্যায়ন করতে পারছি। ফেব্রুয়ারিতে তাদের অবস্থা জানতে পারলে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীর দক্ষতা, প্রায়োগিক সক্ষমতা ও জ্ঞানের বিষয়টি আমরা বুঝতে পারছি না। সে জন্য আগের পদ্ধতির পরিবর্তে এই তিনটি বিষয়ের দক্ষতা যাচাই করা হবে।’
অভিভাবকদের উদ্দেশে নওফেল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ক্ষতির কথা চিন্তা করে আমরা পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাইনি। যদিও আমাদের মন্ত্রণালয়ের টিম পরিদর্শনে থাকবেন। নিজের সন্তানের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে এই জড়ো হওয়া থেকে বিরত থাকি।’
মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধাবস্থা চলছে। শিক্ষার্থীরা আতঙ্কের মধ্যে আছে। এ বিষয়ে বিশেষ কোনও নজর আছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ চলছে। সংঘর্ষের কারণে সেখানে কোনও শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে আমরা তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারবো। চট্টগ্রাম বোর্ড তাদের জন্য ব্যবস্থা নেবে।’
এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ায়। যারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এটি করে। আবার আরেকটি গোষ্ঠী প্রতারণার জন্য এসব করে থাকে। অভিভাবকরা যেন নৈতিক অবস্থানে কোনও আপস না করেন। মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষায় একই রকম কাজ করা হয়। মেডিক্যাল পরীক্ষায় সহযোগিতার জন্য মেসেজ পাঠানো হয় আমাকেও।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোলায়মান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার প্রমুখ।