জয়পুরহাটে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র মোয়াজ্জেম হোসেন (১৬) হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বাইতুল হোসেন সুজনকে (৩৭) গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতার সুজন জয়পুরহাট সদর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট সিপিসি-৩, র্যাব-৫ কোম্পানি অধিনায়ক মেজর শেখ সাদিক।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০০২ সালের ২৮ জুন বিকালে জয়পুরহাট শহরের প্রামানিক পাড়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে মোয়াজ্জেম বাড়ি থেকে বেড়ানোর কথা বলে বের হন। পরে রাত ৯টা পর্যন্ত বাড়িতে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি করে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জানতে পারেন মোয়াজ্জেম জয়পুরহাট সদরের জামালগঞ্জ রোডের পাকা রাস্তা থেকে দুইশ ফিট দূরে জখম অবস্থায় পড়ে আছে।
সেখান থেকে স্থানীয়রা ও সদর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন রাত সাড়ে ১১টায় মোয়াজ্জেম মারা যান। পরে নিহতের বাবা জানতে পারেন তার ছেলেকে শহরের চিত্রা সিনেমা হলের পাশে থেকে ধরে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পায়ের রগ কেটে ও লাঠির আঘাতে জখম করে আম গাছের নিচে ফেলে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় নিহত মোয়াজ্জেমের বাবা ফজলুর রহমান ২৯ জুন বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা করলে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাহবুব আলম ২০০৩ সালের ২৯ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ২১ বছর পর দীর্ঘ শুনানি শেষে গেলো ৩১ জানুয়ারি জয়পুরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীন স্কুলছাত্র মোয়াজ্জেম হোসেন হত্যার রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে ৫ আসামি উপস্থিত থাকলেও বাকি ৬ জন ছিলেন পলাতক।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বেদারুল ইসলাম ওরফে বেদীন, সরোয়ার রওশন ওরফে সুমন, মশিউর রহমান এরশাদ ওরফে বাবু, মনোয়ার হোসেন ওরফে মনছুর, নজরুল ইসলাম, রানা, শাহী, টুটুল, সুজন, রহিম ও ডাবলু।
মামলার রায় হওয়ার পর থেকেই র্যাব-৫ এবং র্যাব-১০ এর গোয়েন্দা দল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে নজরদারি বৃদ্ধি করে। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে র্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা এলাকা থেকে সুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জয়পুরহাট সদর থানায় গ্রেফতারকৃত আসামিকে হস্তান্তর করা হয়েছে।