২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামে আরও এক লাখ আবাসিক গ্রাহক পাচ্ছেন গ্যাসের প্রিপেইড মিটার। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে মিটার বসানো শুরু করেছে চট্টগ্রামে গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. নাহিদ আলম বলেন, ‘চট্টগ্রামে দ্বিতীয় দফায় আবাসিকে গ্যাসের মিটার লাগানোর কাজ ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। বর্তমানে হালিশহর এলাকায় এই মিটার লাগানো হচ্ছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) পর্যন্ত এক হাজার ১০০টি মিটার বসানো সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। আমাদের চেষ্টা থাকবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এক লাখ মিটার লাগানোর কাজ সম্পন্ন করা। গত ২৯ নভেম্বর প্রিপেইড মিটারের প্রথম চালান জাপান থেকে দেশে এসেছে।’
কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, এর আগে জাইকার অর্থায়নে প্রথম দফায় চট্টগ্রামে ৬০ হাজার গ্যাসের গ্রাহককে মিটারের আওতায় আনা হয়। কর্ণফুলী গ্যাসের আবাসিক ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১ জন গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে ন্যাচারাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্টের মাধ্যমে ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনে কেজিডিসিএল। ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালে হাতে নেওয়া এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্যাস সাশ্রয়সহ গ্রাহক ভোগান্তি কমে আসায় প্রিপেইড মিটার স্থাপনে দ্বিতীয় ধাপে নতুন এ প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ।
‘আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প’ শিরোনামে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে এক লাখ মিটার স্থাপনের জন্য দ্বিতীয় ধাপে প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল। প্রাথমিক পর্যায়ে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ২৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথমে মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। সংস্থাটির নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় রোধ, সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত ও গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস করা। তবে নানা জটিলতার কারণে পিছিয়ে যায় এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন। এরপর প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, পাশাপাশি সময় বেড়ে হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।
কেজিডিসিএল সূত্র জানিয়েছে, ‘চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ধাপে এক লাখ প্রিপেইড মিটার বসানোর জন্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাপানি প্রতিষ্ঠান টয়োকিকি কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। এসব প্রিপেইড মিটার নগরী ও জেলায় বসানো হবে। গ্রাহক যত গ্যাস ব্যবহার করবে তত পরিমাণ বিল দেবে। এর সঙ্গে ২০০ টাকা মিটার চার্জ দিতে হবে। এর বাইরে ডিমান্ড চার্জ বা ভ্যাট বাবদ কোনও অর্থ গুনতে হবে না গ্রাহকদের।’
প্রকৌশলী মো. নাহিদ আলম বলেন, প্রিপেইড মিটারে প্রতি চুলায় গ্রাহকের সাশ্রয় হবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জের মতোই গ্রাহকরা মিটারে প্রয়োজনীয় গ্যাসের টাকা রিচার্জ করতে পারবেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরীর হালিশহর, সদরঘাট, বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, পাহাড়তলী, খুলশী, ইপিজেড, বাকলিয়া, কোতোয়ালী, ডবলমুরিং, বন্দর, পতেঙ্গা, আকবরশাহ এবং জেলার হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, কর্ণফুলী, আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী এবং চন্দনাইশ উপজেলার এক লাখ গ্রাহক প্রিপেইড মিটার পাবেন।