হামাসের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত কেউই ইসরাইলকে যুদ্ধ বন্ধ করাতে পারবে না বলে দম্ভ প্রকাশ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজা হামলার শততম দিন উপলক্ষ্যে তিনি এক ভাষণে এসব কথা বলেন।
ওদিকে হেগে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে দু’দিন শুনানি হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলায় এই শুনানি হয়। তবে ইসরাইল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ হিসেবে গাজায় ভয়াবহ আকাশ ও স্থল হামলা বন্ধের জন্য ইসরাইলের প্রতি নির্দেশ দিতে আইসিজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গাজায় যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল, সঙ্গে দেশটির নেতারা যে উস্কানিমূলক এবং অবমাননাকর মন্তব্য করে যাচ্ছেন- তাকে গণহত্যার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ অভিযোগকে শুক্রবার ইসরাইল কর্তৃপক্ষ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
গাজায় হামলার শততম দিন উপলক্ষ্যে নেতানিয়াহু বলেছেন, দ্য হেগ, শয়তানি কোনো চক্র বা অন্য কেউই আমাদেরকে থামাতে পারবে না। উল্লেখ্য, আইসিজেতে যে মামলা হয় তা চলতে থাকে বছরের পর বছর। তবে অন্তর্বর্তী একটি আদেশ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আসতে পারে। আদালতের রায় বাধ্যতামূলক।
তবে তা বাস্তবায়ন বা প্রয়োগ খুব জটিল। নেতানিয়াহু পরিষ্কার করে বলেছেন যে, যুদ্ধ বন্ধের যেকোনো নির্দেশ উপেক্ষা করবে ইসরাইল।
ওদিকে যুদ্ধ বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। এরই মধ্যে কমপক্ষে ২৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। লাখো মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। তবে ইসরাইলের যুক্তি হলো যদি যুদ্ধ বন্ধ করা হয় তাহলে তাতে বিজয়ী হবে হামাস। ২০০৭ সাল থেকে এই গ্রুপটি গাজা শাসন করছে। তারা ইসরাইলের ধ্বংস চায়। সর্বশেষ গত ৭ই অক্টোবর তারা ইসরাইলের ভিতরে রকেট হামলা করে। এতে প্রায় ১২০০ মানুষ মারা যায়। এর বেশির ভাগই বেসামরিক। প্রায় আড়াইশত মানুষকে জিম্মি করে হামাস। এর জবাবে ইসরাইল গাজায় হামলা শুরু করে। আজ রোববার এই হামলার শততম দিন।
যুদ্ধের শুরু থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছিল। দ্রুততার সঙ্গে এই যুদ্ধের বিস্তৃতি দেখা দেয়। ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইরান সমর্থিত ইরাক ও সিরিয়ায় মিলিশিয়ারা হামলা চালাতে থাকে। উত্তেজনা প্রশমনে প্রথম দিকে ওই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করে যুক্তরাষ্ট্র। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুতিদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন শুক্রবার এসব বিদ্রোহীর অবস্থানের ওপর আকাশপথে হামলা শুরু করে। শনিবার আরও একটি স্থাপনায় হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র।