শেষ বাঁশি বাজার পর মুভিস্টার প্লাসকে কার্লো আনচেলত্তির বলা কথাগুলো শুনলেই বোঝা যায় মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেমন ছিল, ‘অসাধারণ! তবে এমন ম্যাচ আমরা উপভোগ করি না। ধকল যায় অনেক বেশি। খুব শক্তিশালী দুই দল মাঠে নিজেদের সর্বস্ব নিংড়ে দিয়েছে।’
খুবই সত্য কথা। মাঠে খেলোয়াড়দের নিংড়ে দেওয়ার পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে স্কোরলাইন। গতকাল রাতে সৌদি আরবের রিয়াদের আল আওয়াল স্টেডিয়ামে স্প্যানিশ সুপার কাপ সেমিফাইনালে ‘মাদ্রিদ ডার্বি’তে দেখা গেল ৮ গোলের রোমাঞ্চ, যেখানে ৫-৩ ব্যবধানে জয়ী রিয়াল। সেটাও ম্যাচে দুবার পিছিয়ে পড়ে তুলে নেওয়া জয়! আনচেলত্তি কি সাধেই বলেছেন, ধকল যায় অনেক বেশি! অবশ্য তাতে দর্শকদের পয়সা উশুল। ‘আরব্য রজনী’র গল্পের মতোই রোমাঞ্চ উপহার দিয়েছে এই ম্যাচ। সম্ভবত স্প্যানিশ মৌসুমে এখন পর্যন্ত হওয়া ম্যাচগুলোর মধ্যেই সেরা।
সেমিফাইনালের অপর ম্যাচে বার্সেলোনা ও ওসাসুনার মধ্যে জয়ী দল রোববার ফাইনালে রিয়ালের মুখোমুখি হবে। সেমিফাইনালে তাকিয়ে সে ম্যাচের প্রস্তুতি নেবে রিয়াল। ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়া, আত্মঘাতী গোল—এসব বিষয় শুধরে নেওয়ার সুযোগ আছে। আতলেতিকো মাদ্রিদ মারিও হেরমোসোর হেড থেকে করা গোলে ৬ মিনিটেই এগিয়ে গিয়েছিল। ২০ মিনিটে লুকা মদরিচের কর্নার থেকে আন্তোনি রুডিগারের গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল। ৯ মিনিট পরই ফেরলাঁ মেন্দির গোলে এগিয়েও গিয়েছিল আনচেলত্তির দল। কিন্তু আঁতোয়ান গ্রিজমান ভেবে রেখেছিলেন অন্য কিছু। ৩৭ মিনিটে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় দূরপাল্লার শটে গোল করেন ফরাসি তারকা। এই গোলে আতলেতিকো প্রথমার্ধে শুধু সমতা নিয়েই মাঠ ছাড়েননি, রেকর্ডের দেখা পেয়েছেন গ্রিজমানও। আতলেতিকো মাদ্রিদের ইতিহাসে লুইস আরাগোনাসকে টপকে সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন গ্রিজমান (১৭৪)।
বিরতির পর ম্যাচের ৭৮ মিনিটে রুডিগারের আত্মঘাতী গোলে আবারও এগিয়ে গিয়েছিল আতলেতিকো। ম্যাচে দু-তিনটি ভালো সেভ করলেও গোলকিপার কেপা আরিজাবালাগার খামতি ছিল এই গোলে। বলটা ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। ৭ মিনিট পরই দানি কারভাহালের গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও জুড বেলিংহামের শট রুখে দেওয়ার পর ফিরতি বলে গোল করেন কারভাহাল। নির্ধারিত সময় ৩-৩ সমতায় শেষ হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচের ১১৬ মিনিটে স্টেফান সাভিচের আত্মঘাতী গোলে কপাল পোড়ে আতলেতিকোর। আর ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে প্রতি–আক্রমণ থেকে শেষ গোলটি করেন ব্রাহিম দিয়াজ। সমতায় ফিরতে মরিয়া আতলেতিকো গোলকিপার ইয়ান ওবলাক রিয়ালের বক্সে ছুটে গিয়েছিলেন কর্নার থেকে গোল করার আশায়। সুযোগটা নিতে ভুল করেননি ব্রাহিম দিয়াজ।
হারের পর আতলেতিকো কোচ দিয়েগো সিমিওনে বলেছেন, ‘খেলোয়াড়দের বলেছি, আমি ওদের পারফরম্যান্সে গর্বিত। ফলটা দুর্ভাগ্যজনক হলেও ওরা অসাধারণ খেলেছে!’