বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বেশি দামে কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এইচ এন্ড এম, গ্যাপের মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের ক্রেতারা। সম্প্রতি দেশে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক কর্মীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং তাদের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানাতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে এক হাজারের বেশি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্বকারী যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ)।
ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর ফলে ৫-৬ শতাংশ বাড়তি উৎপাদন ব্যয় ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হবে। এএএফএ’র প্রধান নির্বাহী স্টিফেন লামার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ই-মেইলে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের পর বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। এই সপ্তাহে, পুলিশ এবং কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে মারাত্মক বিক্ষোভের পরে সরকার ডিসেম্বর থেকে ন্যূনতম মাসিক মজুরি প্রায় ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা (১১৩ ডলার) করতে বাধ্য হয়েছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটিই প্রথম বেতন বৃদ্ধি।
কারখানার মালিকদের দাবি, মজুরি বাড়ানোর ফলে তাদের উৎপাদন ব্যয় অন্তত ৫ থেকে ৬ শতাংশ বেড়ে যাবে। কারণ, শ্রমনির্ভর এ শিল্পের ১০ থেকে ১৩ শতাংশ ব্যয়ই হয় মজুরিতে।
এএএফএর প্রধান নির্বাহী স্টিফেন লামার রয়টার্সকে বলেছেন, ‘যেমন আমরা এবং আমাদের সদস্যরা এখন বেশ কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করেছি, আমরা মজুরি বৃদ্ধিকে সমর্থন করার জন্য দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা একটি বার্ষিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা পদ্ধতি গ্রহণের জন্য আমাদের আবেদনও পুনর্নবীকরণ করছি যাতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে সুবিধাবঞ্চিত না হয়।’
কম মজুরির কারণে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প গড়ে উঠেছে। এই শিল্পে প্রায় ৪০ লাখ লোক কাজ করে। এমনকি তৈরি পোশাক দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি ও জিডিপির প্রায় ১৬ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্য অনুসারে, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির পরেও বাংলাদেশ অন্যান্য আঞ্চলিক পোশাক উৎপাদনকারী দেশ যেমন ভিয়েতনাম থেকে পিছিয়ে আছে যেখানে গড় মাসিক মজুরি ২৭৫ ডলার এবং কম্বোডিয়ায় ২৫০ ডলার। শ্রমিকরাও বলেছেন, তাদের মজুরি বৃদ্ধির পরেও অনেক কম।
গত মাসে এএএফএ’র বেশ কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, তারা চান শ্রমিকদের মজুরি বাড়ুক এবং মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় আনা হোক, যা বর্তমানে ৯ শতাংশে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের খুচরা বিক্রেতারাই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান ক্রেতা। বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্যের খুচরা বিক্রেতাদের মতো ফ্যাশন কোম্পানিগুলো উচ্চ ইনভেন্টরি এবং মন্থর বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে লড়াই করছে। মূল বাজারের ক্রেতারা সংকটের কারণে কম কম কিনছে।