দেশে ডেঙ্গু রোগী বাড়ায় শিরায় দেয়া স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে সব জায়গায়। বিভিন্ন জেলায় শিরায় দেয়া স্যালাইনের সংকট চলছে। সর্দি-জ্বর, ঠাণ্ডা-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। এতে চাহিদা বেড়েছে এনএস ও ডিএনএস স্যালাইনের। চাহিদার তুলনায় হাসপাতাল ও ফার্মেসিতে পর্যাপ্ত স্যালাইন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। হাসপাতালে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চাহিদামতো স্যালাইন দিতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। এমন পরিস্থিতিতে ভারত থেকে স্যালাইন আমদানি শুরু করেছে সরকার।
ফার্মেসি মালিকদের দাবি, ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের চাহিদা অনুযায়ী স্যালাইন না দেয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। আর ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন, এলসিসহ কাঁচামালের স্বল্পতার কারণে কোম্পানি চাহিদা অনুযায়ী স্যালাইন দিতে পারছে না। যেখানে এক ফার্মেসির প্রয়োজন দুই কেস, সেখানে দেয়া হচ্ছে মাত্র পাঁচ থেকে ১০ ব্যাগ। একমি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার পরে স্যালাইন এবং সাপোজিটরের সংকট দেখা দিয়েছে। উৎপাদন করতে না পারায় গত দুই মাস থেকে আমরা চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই দিতে পারছি না।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে স্যালাইন উৎপাদন হয় না। শিরায় দেয়া স্যালাইন উৎপাদন করে ছয়টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে স্যালাইন কেনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একমাত্র ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। ইডিসিএল সেসব স্যালাইন সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই ছয় কোম্পানি মাসে সাড়ে ৪৬ লাখ ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করে। এর মধ্যে আছে সাধারণ স্যালাইন, গ্লুকোজ মিশ্রিত সাধারণ স্যালাইন ও কলেরার স্যালাইন।
স্যালাইন সংকটের কারণে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু, সার্জারি, ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন রোগীকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো তীব্র স্যালাইন সংকটে ভুগছে। তবে সম্প্রতি দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্যালাইন সংকট কাটলেও বেসরকারি হাসপাতালে সংকট এখনো কাটেনি। সংকট সমাধানে ৭ লাখ স্যালাইন আমদানির অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এদিকে, সরবরাহ সংকটের কারণে স্যালাইনের দামও বেড়ে গেছে দুই থেকে তিনগুণ। সংকট মেটাতে বাজার মনিটরিংয়ের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে স্যালাইন আমদানি করা হলে এ সপ্তাহে সংকট কেটে যাবে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।