অনেকদিন পর ইজ্জত আলীর সাথে দেখা, তার চোখে দামী কালো সানগ্লাস দেওয়া, পরনে দামী জিন্সের প্যান্ট শার্ট, অবশ্য পায়ের চকলেট কালার শো গুলো অনেক মূল্যের হবে। প্রথমে তাকে চিনতে একটু আমি নিজেই আচমকা হয়েছিলাম। ইজ্জত আলী নিজ থেকেই বলছে “আমি ইজ্জত আলী কাউকে দেইনা গালি” তার এই ডায়লগ শুনেই আমি ঠিকই বুঝতে পারলাম সেই ইজ্জত আলী যে পেন্ট শার্ট কখনো দুই সপ্তাহের পর একবার ধুয়েছে, পায়ের স্যান্ডেলের ফিতা গুলো গুনা দিয়ে মুড়াতে মুড়াতে আর জায়গা নেই, তবে ছেঁড়া পকেটে পঞ্চাশ পয়সা থাকলে সেটা দিয়ে সুপার বিস্কুট কিনে বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ করে খেতো। কিন্তু আজ ইজ্জত আলী নাকি আলাউদ্দিনের চেড়াগ নিয়ে খেলছে গ্রামের সহজ সরল মানুষ গুলোর মুখেই শুনতে পেলাম। গ্রামের টং চায়ের দোকান থেকে শুরু করে উপজেলা সদরের দামী রেস্টুরেন্টের টেবিলেও এখন ইজ্জত আলীকে নিয়েই আলোচনা সমালোচনা দুটোই চলছে। কখনো কখনো নাকি চায়ের কাপে বাজিতেও জড় উঠে। হঠাৎ করে শহরে দেখা হিরালালের সাথে, ল্যান্ডকোসার গাড়ি থেকে নামতেই দুই তরুণী অন্য এক এক্সকরলা গাড়ি থেকে নেমে এসে একটা ফাইল সামনে এগিয়ে দিলো স্যার সম্বোধন করে ফিসফিস করে কি যেনো বুঝিয়ে দিলো হিরালাল দুই মিনিট ফাইলটা নাড়াচাড়া করে তরুণীদের হাতে দিয়ে বিদায় দিলো।
হিরালালের হাতে বিদেশি বেনসন সিগারেটের পেকেট। প্রথমে তাকেও চিনতে পারিনি, হেন্ডস্যাক করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিতেই বলছে “আমি হিরালাল একদিন হবো মহাকাল সবই হবে লন্ড ভন্ড” তবে এই ডায়লগের সাথে তার কাজকর্ম ছিলো অমিল। স্কুলে আসার আগে প্রতিদিন ঘরে পুজো দিয়ে আসতো। প্রায়সময় বন্ধুদের জন্য পুজোর প্রসাদ নিয়ে আসতো, তাকে সব বন্ধুরা বন (ব্রাহ্মণ) বলে ডাকতো। হিরালালকে বললাম সাথে প্রসাদ আছে নাকি সে হাসতে হাসতে গাড়ির দরজা খুলে একটা বড় কালো বোতল হাতে করে নিয়ে এসে সামনের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল এটা অনেক দামী, হ্যাঁ, বোতলটা দেখেই মনে হচ্ছে বিদেশী ব্রান্ডের মদ হবে। তাহলে বুঝতেই পেরেছেন প্রসাদ এখন দামী ব্রান্ডের বোতল হয়েছে, আর ইজ্জত আলীর সুপার বিস্কুট গোল্ডের বিস্কুট হয়ে গেছে। গল্পটা তুলে ধরার কারণটা কি অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন, তারপরও আরও সহজ গল্প কিছু লেখা যায় কিনা সেটাই চেষ্টা করছি। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও যদি রাজপথে দাঁড়িয়ে গনতন্ত্রের মুক্তির, অর্থনৈতিক মুক্তি, সমাজতন্ত্রের মুক্তি, ধর্মনিরপেক্ষতার মুক্তি, মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের জন্য স্লোগান ধরতে হয় তাহলে দেশ স্বাধীনতার স্বাদ কি’বা পাওয়া গেলো।
অবশ্য স্বাধীনতার সুখপাখি সাধারণ জনগণ না পেলে তাতে কি আসে যায়, পবিত্র সংসদে প্রবেশকারীরা তো পেয়েছে, পুঁজিবাদীরা স্বাধীনতার স্বাদকে সিন্দুকের ভিতরে ঢুকিয়ে কালো কোর্টের পকেটে থাকা সাদা টিস্যু দিয়ে হাত মুছে চাকরকে বলছে এগুলো তোমার পকেটে রেখে দেও ডাস্টবিন পেলে সেখানে ফেলে দিও। সংবিধানে যদিও বলা হয় মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার সবার জন্য, তার মানে হচ্ছে সমান অধিকার, কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ভিন্ন দেখা। সংসদে আইন পাস হয়, কিন্তু এই আইন প্রয়োগ হয় সাধারণ মানুষের উপর, ক্ষমতাধররা আইনকে সিদ্ধি করে খেয়ে ফেলেন, আর পুঁজিবাদীদের টিকেটের নাগাল তো পায়না। দেশের খাদ্য যোগানদাতা হলো কৃষক, মাত্র পাঁচ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে তিনশত টাকার স্টাম্পে স্বাক্ষর করার পরও আরও নিয়মনীতি মেনেই তাকে ঋণ নিতে হয়। কৃষক ঋণ সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলেই কোমরে রশি বেঁধে টানতে টানতে আদালতে নেওয়া হয়, আর ক্ষমতাধর পুঁজিবাদীরা জনগণের ট্যাক্সের হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে, ব্যবসা দেউলিয়ার কথা বলে উল্টো ঋণের মাফ হয়ে যায়, কিন্তু পাঁচ হাজার টাকা মাফ হয়না এই হচ্ছে আমার দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির পরিবর্তনের চিত্র। ৯০ দশক থেকে এরশাদ সরকার (জাতীয় পার্টি) পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের মুক্তি দিবস পালনে আমরা হাঁকডাক শুরু করেছি।
প্রতিবছর গণতন্ত্র মুক্তি দিবস পালন করছি আবার রাজপথে দাঁড়িয়ে গনতন্ত্রের মুক্তি চাই স্লোগানে আমরা হতভম্ব, প্রশ্ন – তাহলে প্রতিবছর যে গণতন্ত্র মুক্তি দিবস পালন করা হয় সেটা কোন গণতন্ত্র ছিলো, এখন যে গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলন করা হয় এইটা কিরকম গণতন্ত্র, “গণতন্ত্র আজও অবরুদ্ধ” সঠিক গণতন্ত্র কোনটা সেটাই সাধারণ জনগণ জানতে চায়। আমার একটা প্রশ্ন রাজনৈতিক নেতাদের কাছে “গণতন্ত্র সাদা নাকি কালো”। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তখন জোর গলায় বক্তব্য দেন তারই একমাত্র গণতন্ত্র চর্চা করেন অন্যান্য দল আন্দোলনের নামে গণতন্ত্র হত্যা করেন। ঐদিকে ক্ষমতায় না থাকা অন্যান্য দল গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য আন্দোলন করেন বলে বক্তব্য দেন। সত্যিকার অর্থে হচ্ছে এই দেশের রাজনৈতিক দলের হাতেই পিষ্ট হচ্ছে গণতন্ত্র, আর গণতন্ত্রের স্লোগানও চলে উল্টো পথে। বর্তমান সময়ে একটা পক্ষ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র চাই আন্দোলন করে যাচ্ছে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র নিয়েও সংসদে আলোচনা সমালোচনা দুটোই চলে। ঐদিকে আরেকটি পক্ষ ধর্মের দোহায় দিয়ে রাজপথ দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো একটা ধর্মনিরপেক্ষতা ও আরেকটা ধর্মীয় অনুসরন পক্ষ উভয়েরা স্ব-স্ব স্হান থেকে সুবিধাজনক জায়গায় তারা অবস্থান করছে, যারা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে প্রস্তাব রাখেন এবং রাজপথে আন্দোলন করেন ঐসব ব্যক্তিরা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় ঐক্য সংগঠনের নামে পদ পদবী দখল করে আছেন, অথচ তারাই আবার ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র চায়। ঘোর ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের পক্ষরা ধর্মকে পুঁজি করে একটা রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছে এবং ধর্মকে অপব্যবহারে সংযুক্ত করে ফয়দা লুটে নিচ্ছে। তার মানেটা হচ্ছে ধর্মের পক্ষে বিপক্ষে উভয় উল্টো পথে রথযাত্রার গান গাইছেন। শুধু ধর্মকেই অপব্যবহার করছে তা নয়, সমাজে ধর্মীয় অনুভূতি এখন দুই ভাগে বিভক্ত। সমাজচিন্তা বিদরা একটা সুশাসন সমাজ, সুশাসন নাগরিক ও বৈষম্য বিমোচক গড়ার প্রত্যায় নিয়ে একটা সুন্দর সমাজতান্ত্রিক দেশ চায়। যেখানে বৈষম্য স্বীকার হবেনা কোন নাগরিক, সমানভাবে গড়ে উঠবে আত্মকর্মসংস্থান হালুয়া রুটির ভাগাভাগি যেন সমান অধিকার হয়ে থাকে এই স্লোগান ভ্যানগার্ডের লাল নকশা হয়ে থাকলেও আদতে ঐসব সমাজচিন্তা বিদরা টুইনটাওয়ারে ঘুমিয়ে টিভির পর্দা কাঁপাতেই যথেষ্ট, বাস্তবে স্ত্রী পুত্র কন্যা কানাডা, আমেরিকার ও লন্ডনে আরাম আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন, তাইতো সমাজতন্ত্র এখন গণেশের নাকের ডগায় ঘুমাচ্ছে। একটা শিক্ষিত “মা” দেও দেশ ও জাতি শিক্ষিত হয়ে উঠবে, বর্তমান দেশেও নাকি শিক্ষিতের হার ৯৫%, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষা যুদ্ধে ১৬০০০ হাজার (ইংরেজি) ছাত্র/ছাত্রী অংশ গ্রহণ করে গ্রামের তিনটি ছাত্র ভর্তির সুযোগ পায়, তাহলে শহরের এতো নামীদামী স্কুল কলেজের ছাত্র/ছাত্রীরা এ প্লাস, জিপিএ ৫ পেলো, এই সনদের মূল্য কি?
২০১২ সাল থেকে শিক্ষার মান বৃদ্ধি করার কার্যক্রমে প্রতিবছর শিক্ষার নিয়মনীতি পরিবর্তন করে আসছে এবং সৃজনশীল ও আধুনিকায়নের নামে আমলা মন্ত্রীদের পকেট ফুলছে আর ঐদিকে শিক্ষিতের হার ১০০% পূরণ করার লক্ষ্যে বিগত পাঁচ বছরে এসএসসি ও এইচএসসি সকল ছাত্র/ছাত্রী গড় হারে ১২০% পাস করিয়ে দেওয়া হয়, যা ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয় এসব ছাত্র /ছাত্রীদের। যে সরকারের আমলেই গণহারে পাসের হার বৃদ্ধি পেয়ে যায়, অথচ যে ছাত্র এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেলো, রেজাল্ট প্রকাশের পর এরকম এক ছাত্রকে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয় বর্তমান রাষ্ট্রপতির নাম বল, প্রধানমন্ত্রীর নাম বল ও শিক্ষামন্ত্রীর নাম বল, দুঃখজনক হলো প্রধানমন্ত্রীর নামটা অনেক কষ্টে বলতে পারলেও বাকি দুইজনের নাম নাকি শুনেনি। এখানেই শেষ নয় স্কুল কমিটির সভাপতি হয় মুদির দোকানদার, চায়ের দোকানদার, কিন্তু এদের শিক্ষাদীক্ষা কতদূর তা যাচাই-বাছাই না করে রাজনৈতিক বড় নেতা, এমপির আর্শীবাদ পুষ্টিতে ফাইল চলে যায় শিক্ষা কর্মকর্তার টেবিলে ব্যস শিক্ষা কর্মকর্তাও পকেট ফুলিয়ে চোখ বন্ধ করে কাজটা সম্পূর্ণ করে দেন। যেখানে সর্বোচ্চ ডিগ্রী দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, আর সেখানেই উপাচার্যের পদ ভাগিয়ে নিতে একটা দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। জ্যেষ্ঠতা আর মেধার ভিত্তিতে উপাচার্য হওয়া যায়না, দলের সাইনবোর্ড গায়ে থাকলে চলবে, মেধার আর জ্যেষ্ঠতার প্রয়োজন নেই শুধু তদবিরটা ঠিক জায়গা মতো করলেই হবে তাহলে ৫জন জ্যেষ্ঠতা ও মেধা ডিঙিয়ে উপাচার্য পদ ভাগিয়ে নিতে কেউ ঠেকাতে পারবেনা। এটাই হলো আমার দেশের শিক্ষা রাজনীতি তার মানে হলো মা দেবী সরস্বতীকে পুঁজো করলেই চলবে রথযাত্রা সামনে এসে এমনিতে হাজির হবে। দেশ পরিচালনা যাদের হাতে ন্যাস্ত তারাইবা কি করছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলেন আর বিভিন্ন দপ্তরের নিম্ন কর্মচারী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা নিজেদের মধ্যেও যেনো পদ পদবী ও সুবিধা ভোগ করে নিতে ১০০মিটার দৌড় যুদ্ধে লেগে আছে, কে কার আগে পদ ভাগিয়ে নিবে ইচ্ছে মতো সুবিধা ভোগ করতে পারবে অবশ্য রাজনৈতিক ছত্রছায়াটাও সুবিধা ভোগের পথ বলা চলে, যদিও বা সরকারি প্রজ্ঞাপন ও সংবিধান লেখা রয়েছে সরকারের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী চাকরিতে অবস্থান কালিন রাজনীতি করতে পারবেনা এবং রাজনৈতিক সংগঠন তৈরি করণ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে সংবিধান মেনে কর্মস্থল পদায়ন করিবেন। অথচ ট্রেড ইউনিয়ন সিবিএ সংগঠনের নামে বহুমুখী সংগঠন তৈরি করে একটা রাজনৈতিক বলয়ে আধিপত্য বিস্তার করে নিয়েছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্মচারী মানে হচ্ছে চাকর দেশ ও জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, কিন্তু সেখানেও চিত্রটা ভিন্ন উল্টো জনগণের সেবা পেতে বসে থাকেন এবং হুকুম জারি করেন জনগণের উপর, মনে হয় তারাই এই দেশ জাতির হর্তাকর্তা। অনিয়মকে নিয়মে তৈরি করা, দূর্নীতিকে সুনীতি করে চালিয়ে দেওয়া, বেআইনিকে আইনে প্রয়োগ করা, কালোকে সাদা বলে নিজেকে মহা পবিত্র ভেবে শতভাগের চাইতেও সততার গুণগান গাওয়া এটা একমাত্র রাজনৈতিক নেতাদের বেলায় চলে, তাও আবার ক্ষমতা থাকলে ও নিজের স্বার্থে বেলায়। সত্যি কথা বলতে গেলে আবার বিলাই বেজার হয়, তখন আবার পাঠা ছাগল কাঁটার বলরামের খড়গটা চলবে লেখকের উপর। যেমন ধরেন সংসদকে পবিত্র স্হান বলে থাকে কিন্তু ঐ পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে দেশ ও জাতির স্বার্থে কথা না বলে কটাক্ষ ভাষায় আঘাত করেন একে অপরকে, ফাইল ছোড়াছুড়ি করে, টেবিলের উপর থাপ্পড় মেড়ে নোংরা ভাষায় কথা বলেন। সেখানেও সাংবিধানিক অধিকার নেই যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তার বেশি কথা বলার অধিকার থাকে, যখন তালিকায় সংখ্যালুগো (বিরোধী দল) তারা যখন সরকারের বিরুদ্ধে বা ক্ষমতায় থাকা এমপি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলবেন সেই মুহুর্তে স্পীকার মহোদয় সাউন্ড সুইচ বন্ধ করে দেন। যেই সংসদে আইন পাস হয় সেখানেই সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়, তাহলে সাধারণ জনগণের অধিকার আদায়ে নিশ্চিত কিভাবে হবে। ক্ষমতায় থাকা এমপি মন্ত্রীরা যখন বলেন সরকার নাকি জনগণের মানবাধিকার নিশ্চিত করছে তখন হাস্যকর লাগে, প্রতিনিয়তই সরকারের আমলা থেকে শুরু নিম্নস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী কতৃক সাধারণ জনগণ কোন না কোনভাবেই নির্যাতন নিপীড়ন ও লাঞ্ছিত হচ্ছে, মানষিক ভাবেও আঘাত হানছে তাহলে রাষ্ট্র কি এর দায়বার এড়াতে পারে কিনা। যদি কারো অধিকার কেরে নেওয়া হয় অগণতান্ত্রিক আচরণ করে প্রতিহিংসা মূলক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাহলে এটা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি! আমরা সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার কথা বলি- অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা।
এই মৌলিক অধিকার সাংবিধানিক অধিকার বলেই জনি কিন্তু গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার হতেই পারতো সেটা যোগ হয়নি কেন। তারপরও মৌলিক অধিকার সাধারণ জনগণ কতটুকু প্রাপ্তি স্বীকার হচ্ছে তা দেখভালের দায়িত্বও রাষ্ট্রের, কিন্তু খাদ্যের জন্য যখন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়, বাসস্থানের জায়গা নিশ্চিত না ভোল্ট ডোজার দিয়ে ছোট্ট কুঁড়ের ঘরটি ভেঙে দেওয়া হয়, হাসপাতালের চিকিৎসকের ধারে ধারে ঘুরেও বারান্দায় পরে থাকা রোগীটা বিনাচিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মরতে হয় নথবা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়, শিক্ষার জন্য নামীদামী ও ভালো স্কুলের নামে মোটা অংকের বিনিময়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলে, সরকারি স্কুল কলেজের দৌড়ঝাঁপে এগিয়ে থাকা সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী ও ধনীদের সন্তাদের দখলে আর পিছিয়ে পরা মধ্যবর্তী এবং গরীবের সন্তানদের হতাশ ছাড়া কিছুই হয়না। তাহলে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হলো কোথায়, এটা সবচাইতে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন নয় কি। আমরা যতকিছুই বলিনা কেন প্রবাদ আছে “বিচার মানি তবে তালগাছটা আমার” জগন্নাথ বলছে তুমি আমার রথকে কলা দেখাচ্ছো কেন আজতো বাজারের সব কলা আমার দখলে তার মানে হচ্ছে “জগন্নাথ রথযাত্রাকে কলা দেখিয়ে লাভ নেই” সময় হলে আমি উল্টো পথেই ঘুরে আসবো, ঠিক তদরুপ আমার দেশের শিক্ষা -দিক্ষা, চিকিৎসা, আইন প্রয়োগ, আইনশৃঙ্খলা, রাজনীতি, সমাজনীতি সবকিছুই চলে উল্টো পথে।।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।