বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আরও প্রচেষ্টায় নিয়োজিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে আলজেরিয়া।
বাংলাদেশও একটি নির্দিষ্ট সময় এবং লক্ষ্য-ভিত্তিক রোডম্যাপের মাধ্যমে নতুন এবং উদীয়মান ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে। এছাড়া মুলতুবি থাকা চুক্তি, সমঝোতা স্মারক এবং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলোকে ত্বরান্বিত করার তাগিদ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলজেরিয়া যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই চুক্তিগুলো সম্পাদন করতে সম্মত হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী এবং ব্রিকস আউটরিচ ফোরামে আলজেরিয়ান প্রতিনিধি দলের প্রধান লাআজিজ ফাইদ বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,অর্থনীতির সম্প্রসারণের ফলে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের এই জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আলজেরিয়ার সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি আলজেরিয়া থেকে এলএনজি কেনার ব্যাপারে বাংলাদেশের গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রী পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় দেশের মধ্যে দীর্ঘ ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা জানান, যার প্রবর্তক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি বাংলাদেশ ও আলজেরিয়ার মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন, যা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান।
মোমেন তাকে ব্রিকসে যোগদানের ব্যাপারে বাংলাদেশের আন্তরিক আগ্রহের কথা জানান।
আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রী ১৯৭৩ সালের ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের উল্লেখ করেন এবং ব্রিকসকে ন্যামের ফল হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন।
উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে যে চমৎকার সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও দেশগুলোর মধ্যে এখনও বিশাল অনাবিষ্কৃত সম্ভাবনা রয়েছে।
ড. মোমেন আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রীকে ‘পারস্পরিক দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন ও বিনিয়োগের সুরক্ষা’ এবং ‘দ্বৈত কর এড়ানোর’ চুক্তি সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার অনুরোধ জানান।
তিনি আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রীকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সম্পর্কেও অবহিত করেন।
বাংলাদেশের ওষুধ ১০০টিরও বেশি দেশে রপ্তানির কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরামর্শ দেন যে আলজেরিয়া বাংলাদেশ থেকে কম দামে সেরা মানের ওষুধ আমদানি করতে পারে।
উভয় দেশ ফার্মাসিউটিক্যালস নিয়ে যৌথ উদ্যোগও শুরু করতে পারে।
তিনি আইটি ও আইসিটি খাত, প্রতিরক্ষা, নির্মাণ খাত, ভোজ্য তেল এবং কৃষিতে সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।
উভয় দেশ আগামী বছরে উচ্চ পর্যায়ের সফরে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকে আলজেরিয়ার অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিষয়টি তুলে ধরবেন।
বৈঠকে আলজেরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।