ঢাকাসোমবার, ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ডিজিটাল লুটপাট চলছে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নামে : নজরুল ইসলাম খান

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
আগস্ট ১২, ২০২৩ ৭:২৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করায় দেশের সর্বত্র সংকট চলছে। চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতের অবস্থা খুবই খারাপ। শিল্প-বাণিজ্য সব খাতের অবস্থা নাজুক। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নামে দেশে ডিজিটাল চুরি ও লুটপাট করা হচ্ছে। অথচ ইন্টারনেটের গতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের থেকেও পিছিয়ে। দেশের মানুষ এখন বাঁচতে চায়। তাই আসুন মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পূরণে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। সেজন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করি। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই এ দেশে ভোট হবে।’

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চিকিত্সকদের সংগঠন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক সংকট ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, বিএমএ’র সাবেক সভাপতি একেএম আজিজুল হক, সাবেক মহাসচিব ডা. গাজী আব্দুল হক, পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ফরিদপুরের এক নেতা ২ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। সেটার কোনো বিচার নেই। আর খালেদা জিয়া একজন বয়স্ক নারী, দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, জামিনও দিচ্ছে না। কারণ আওয়ামী লীগ শক্ত প্রতিপক্ষকে ভয় পায়। তারা তারেক রহমানকে ভয় পায়। একই কারণে ভয় পায় ডা. জোবাইদা রহমানকেও। সেজন্যই তাকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই দণ্ড দিতে গিয়ে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মানুষ নিরাপদে পড়লে পুলিশের কাছে যায়। কিন্তু তারা (পুলিশ) এখন একটি দলের লাঠিয়াল বাহিনীর ভূমিকা পালন করছে। বিচার বিভাগের কাছে মানুষ ন্যায় বিচার আশা করে। সেখানেও একই অবস্থা। আবরার হত্যা মামলার আসামি ছাড়া পায়, আর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরাকে দীর্ঘদিন ধরে বন্দী থাকতে হয়।’

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই শেয়ারবাজার লুট হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক লুট হয়। অন্য সরকারের সময় হয় না। দেশের শতকরা ৫ ভাগ মানুষের হাতে ৯০ শতাংশ অর্থ। এ সময়ে সরকারের লোকেরা কোটিপতি হয়েছে, আর নতুন করে সাড়ে তিন কোটি মানুষ নতুনভাবে দারিদ্র্য হয়েছে। এ সরকার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য গোপন করছে। প্রতিবছর শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আজ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে ক্ষুধার্ত থাকতে হয়।’

জিয়াউর রহমান দেশের কঠিন সংকটের সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন দাবি করে নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘তিনি প্রথম জেড ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর সেই ব্যক্তিকে হেয় করা হয়, অভিযুক্ত করা হয়।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর নাকি জিয়াউর রহমান বেশি বেনিফিশিয়ারি হয়েছিলেন। এসব অপপ্রচার। অথচ শফিউল্লাহ, খালেদ মোশাররফ ও এমএজি ওসমানীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। শুধু জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ। কারণ হলো তার বিরুদ্ধে জনগণের কোনো অভিযোগ নেই। ওই সময় আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ সেখানে জিয়াউর রহমান সফল হয়েছিলেন।’

সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশকে পোস্ট অপারেটিভ ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে পরিণত করেছে। এখন মানুষ স্বাভাবিকভাবে চিন্তাও করতে পারছে না। মানুষ তারা ঠিকমতো খেতে পারছে না। এক ডিমের দাম ১৫ টাকা। মাছ মাংসের দাম তো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। আসলে এসবই দুর্ভিক্ষের ইঙ্গিত। চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজরা আজ এমপি। দেশের বিভিন্ন এলাকা বন্যায় তলিয়ে গেছে, সেদিকের খবর নেই। এককথায় সব জায়গায় অনিয়ম দুর্নীতি চলছে। যে কারণে সর্বত্র দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’

অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, আজ খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ। আমরা তার অবিলম্বে মুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।