কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ছয়জন পার্লামেন্টারিয়ানের বিবৃতিটি পড়ে মনে হয়েছে, এটি বিএনপির ইউরোপিয়ান শাখার বিবৃতি।’ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বিবৃতিটিতে দেওয়া তথ্য ভুল, এতে মিথ্যাচার করা হয়েছে। এর ভাষা ও বিষয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টের কাছে এই বিবৃতি আশা করি না।’
বিবৃতিটিকে চ্যালেঞ্জ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা বলেছে–এখানে সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তারা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, আওয়ামী লীগ জন্মের পর থেকে উদ্দেশ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক, ধর্ম নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। এই আদর্শ থেকে কোনদিন আওয়ামী লীগ বিচ্যুত হয়নি। পর্দার অন্তরাল দিয়ে লালকুঠি, নীলকুঠিতে ষড়যন্ত্র দিয়ে কোন বাহিনীর সহায়তা নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, তাঁর নির্বাচনী এলাকা মধুপুর বনাঞ্চলে অনেক আদিবাসী গারো রয়েছে। ৯৯ ভাগ আদিবাসী আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। তারা জানে আওয়ামী লীগ তাদের নাগরিক অধিকার পূর্ণ দেয়। বাঙালি ও আদিবাসীর মধ্যে কোন পার্থক্য করে না।
জাতিসংঘের মহাসচিবকে টিম পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রতিনিধি দল পাঠান। ইইউর তথ্য এবং বক্তব্য তারা যদি প্রমাণ করতে পারে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করেছি, নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি, আমরা তার জবাব দেব। যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব। কিন্তু এই ধরণের মিথ্যাচারকে কখনও গ্রহণ করব না। এটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তারা আরও অনেক কথা বলেছে তা খুবই দুঃখজনক।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন আছে। তার ভিত্তিতে একজনের সাজা হয়েছে। তারা কি মুক্তি দেওয়ার কথা বলতে পারে? তারা রায় রিভিউ করার কথা বলতে পারে।’
সাময়িক আঘাতে সাময়িক বিপর্যয় হতে পারে বলে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সামিয়ক যত আঘাত আসুক না কেন। আমি বলতে চাই আমাদের সাময়িক বিপর্যয় হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাক বা না থাক। এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ দল এবং রাজনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সাময়িক বিপর্যয় হতে পারে। যত রকম আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা মোকাবিলা করে উন্নয়নের শিখরে যাবে। আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি আবারও জ্বালাও পোড়াও করে তাহলে দেশের অর্থনীতি হুমকির সম্মুখীন হবে।’